ছাত্রলীগের সমাবেশে খাবার, খালি মুখে ক্যান্টিন থেকে ফিরছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা

0
125
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের ক্যান্টিন থেকে ছাত্রলীগের সমাবেশের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা খাবার না পেয়ে ক্যান্টিন থেকে ফিরছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিছু হলের ক্যান্টিনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য রান্নাই হয়নি।

আজ শুক্রবার সরেজমিনে হল ক্যান্টিনগুলোতে গিয়ে জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ বিকেলে অনুষ্ঠিতব্য ছাত্রলীগের সমাবেশের জন্য অর্ডারের খাবার তৈরি করা হয়েছে ক্যান্টিনে। ফলে অন্য খাবার তৈরি করা হয়নি। অর্ডারের অতিরিক্ত কিছু খাবার ছিল, যা দুপুর ১২টার আগেই শেষ হয়ে যায়। এরপরে গিয়ে আর কেউ খাবার পাননি। কিছু হলে খাবার রান্না হয়নি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য।

নাম না প্রকাশের শর্তে বিজয় একাত্তর হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সাধারণত দুপুর দুইটা পর্যন্ত ক্যান্টিনে খাবার পাওয়া যায়। আজ ১২টায় গিয়েও খাবার পাইনি। দোকান থেকে রুটি আর কলা খেয়ে এসেছি। এতে কি পেট ভরে? রুমে এসে চিড়া  ভিজিয়েছি। কোনোমতে পেট বাঁচানো আর কী।’

বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিনের দরজায় ‘আজ নাস্তা ও দুপুরের খাবার বন্ধ’ লেখা দেখা গেছে। তবে কে বা কারা এটি লিখেছেন তা উল্লেখ নেই।

মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের হলে আজকে ক্যান্টিনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার রান্না করা হয়নি। প্রোগ্রামের জন্য খাবার বানানো হয়েছে শুধু। আমাদের প্রথম বর্ষে যারা প্রোগ্রামে যাবে, তাদের জন্য মেসে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সেখানে খেয়েছি।’

ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ক্যান্টিনে আমরা যারা ছাত্রলীগ করি তারাই খাচ্ছে। তবে যারা পলিটিক্স করে না ওদের জন্য কী ব্যবস্থা সেটা জানি না।’

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্যান্টিনে কোনো রান্না হয় নাই। কোথাও খাবার নাই। আমরা এখন রুমে রান্না করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলের প্রাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘হলের ক্যান্টিনে খাবার রান্না হচ্ছে না- এমন তথ্য আমার জানা নাই। রান্না হবে না কেন? বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পুরোনো ক্যান্টিনে কোনো খাবার নেই। পরে নতুন ক্যান্টিনে শুধু অল্প পরিমাণে তেহারি ছিল। সেটা পেয়েছি।’

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের এখানে রান্না হয়েছে। তবে সাড়ে ১১টায় খাবার শেষ। এরপরে যারা খেতে গেছে তারা কেউই খাবার পায়নি।’

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ক্যান্টিন বন্ধ পাওয়া গেছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে একজন ক্যান্টিন পরিচালক বলেন, ‘ভাইয়েরা সমাবেশের জন্য খাবার অর্ডার দিয়েছে। সেই খাবার তৈরি করতে গিয়ে ছাত্রদের জন্য আজ রান্না করা যায়নি।’

আরেকজন বলেন, ‘আমরা রান্না করেছি। তবে খাবার শেষ হয়ে গেছে অনেক আগে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল বাছির ও সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ জাকির হোসেন ভুঁইয়াকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.