সকালে সূর্য ওঠার আগেই ছদ্মবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। কাউন্টার খোলার পর যাত্রী সেজে টিকিট কাটতে যান তাঁরা। এ সময় নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র তাঁদের নজরে আসে। খবর পান জুয়েল মিয়া নামের এক কালোবাজারি মুঠোফোনে যোগাযোগ করে টিকিট বিক্রি করছেন। তাঁরাও টিকিটের জন্য জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। টিকিট বিক্রি করতে এসেই আটক হন জুয়েল। এ সময় হাতে লিখে ট্রেনের টিকিট বিক্রির সময় ফখরুল ইসলাম নামের এক কাউন্টারম্যানকে আটক করা হয়।
আজ রোববার ভোর চারটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ঘটনা এটি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টিকিট কালোবাজারি জুয়েলকে চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং কাউন্টারম্যান ফখরুলকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। কারাদণ্ড পাওয়া জুয়েল জেলা শহরের উত্তর মৌড়াইল এলাকার বাসিন্দা।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোশারফ হোসাইন ছদ্মবেশে আজ ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, জুয়েল নামের এক যুবকের কাছে অনেক টিকিট পাওয়া যায়। জুয়েলের মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে ইউএনও সেলিম শেখ তাঁকে ফোন করে টিকিট কিনতে চান। এ সময় জুয়েল মুঠোফোনে জানান, যতগুলো লাগবে সব টিকিট ব্যবস্থা করতে পারবেন। কিন্তু প্রতি টিকিটের মূল্য ৬০ টাকার পরিবর্তে ২৫০ টাকা করে দিতে হবে। দর–কষাকষির একপর্যায়ে জুয়েল স্টেশন ফটকের সামনে এসে টাকা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে বলেন। পরে জুয়েল হাতেনাতে আটক হন। আর হাতে লিখে ট্রেনের টিকিট বিক্রির সময় আখাউড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনের কাউন্টারম্যান ফখরুল ইসলামকেও আটক করা হয়।
ইউএনও মোহাম্মদ সেলিম শেখ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোশারফ হোসাইন জানান, টিকিট কালোবাজারি জুয়েলকে দণ্ডবিধি ১৮৬০–এর ২৯১ ধারায় ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিতাস ট্রেনের টিকিট কাউন্টারম্যান ফখরুলকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯–এর ৪০ ধারায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়।