চোখে গুলি ঢুকে আটকে যায় শিশু আহাদের মাথায়

এক দিন পর হাসপাতালে মৃত্যু

0
50
শিশু আবদুল আহাদ। ছবি: সংগৃহীত

স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন আবুল হাসান। গত ১৯ জুলাই বিকেলে সবাই বাসাতেই ছিলেন। এ সময় তাদের বাসার নিচে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলছিল। বারান্দায় এক পাশে বাবা, আরেক পাশে মা ও মাঝে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছিল ছোট ছেলে আবদুল আহাদ (৪)। হঠাৎ একটি গুলি তার ডান চোখে বিদ্ধ হয়ে মাথায় ঢুকে যায়। মুহূর্তেই মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে সে। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আয়কর বিভাগের উচ্চমান সহকারী আবুল হাসানের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামে। রায়েরবাগে ১১ তলা একটি বাড়ির আট তলায় স্ত্রী সুমি আক্তার, বড় ছেলে দিহান মাতুব্বর (১১) ও ছোট ছেলে আহাদকে নিয়ে থাকতেন তিনি।

স্বজনরা জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আহাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসকরা বলেন, গুলি মাথার মধ্যে আছে। কোন অবস্থানে আছে, তা বুঝতে সিটিস্ক্যান করতে হবে। কিন্তু সিটিস্ক্যান করতে নেওয়া হলে আইসিইউর যন্ত্রপাতি খুলে ফেলতে হবে। এতে শিশুটির মৃত্যু হতে পারে। এদিকে সিটিস্ক্যানও জরুরি। পরদিন শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আহাদকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে রোববার মরদেহ বুঝে পান স্বজনরা। তারপর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান। বাদ মাগরিব পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আবুল হাসান বলেন, ‘সবকিছু যেন চোখের পলকে ঘটে গেল। আমার আদরের ছোট ছেলেকে হারালাম। এ নিয়ে আর কী বলব!’

শিশু আহাদের চাচা মোখলেসুর রহমান জানান, বাড়িতে আগে পারিবারিক কবরস্থান ছিল না। আহাদকে দাফনের মধ্য দিয়েই কবরস্থানটির যাত্রা শুরু হলো।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.