জব্দ হরিণের মাংস গায়েব করা বন কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

0
86
সুন্দরবনের হরিণ

পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জের বজবজা টহল ফাঁড়ির সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রিকে জব্দ হরিণের মাংস গায়েব করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার বন অধিদপ্তর থেকে এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।

গত ২১ সেপ্টেম্বর ‘খুলনার কয়রায় জব্দ হরিণের মাংস গায়েব’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বন কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রিকে সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের বজবজা টহল ফাঁড়ি থেকে সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন কাঁচিকাটা টহল ফাঁড়িতে বদলি করে বন বিভাগ।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাসানুর রহমানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেলে জব্দ হরিণের মাংস গায়েবের সঙ্গে জড়িত বন কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রির বিরুদ্ধে বন অধিদপ্তর থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি হয়।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, বরখাস্ত বন কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রিকে খুলনা বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, কয়রা উপজেলার জোড়শিং লঞ্চঘাট থেকে রাতে ছেড়ে আসা খুলনা শহরগামী লঞ্চ থেকে একটি ড্রাম ও একটি ঝুড়িবোঝাই ১৫০ কেজির মতো হরিণের মাংস উদ্ধার করে সুন্দরবনের বজবজা টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা। কিন্তু আদালতে জমা দেওয়া জব্দ তালিকায় শুধু একটি প্লাস্টিকের ড্রামের কথা উল্লেখ করে মাংস দেখানো হয় মাত্র ২৫ কেজি। সেখানে বাকি ঝুড়িতে থাকা হরিণের মাংসের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

ওই রাতে কয়রার জোড়শিং থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চের চালক ও লঞ্চে থাকা একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনরক্ষীরা কয়রার হরিহরপুর লঞ্চঘাটের পন্টুনে লঞ্চ ভিড়িয়ে দুটি পাত্রবোঝাই ১৫০ কেজির মতো হরিণের মাংস লঞ্চ থেকে নামিয়ে নেন। অথচ বনরক্ষীরা দাবি করেন, হরিহরপুর লঞ্চঘাট থেকে নয়; বরং জোড়শিং লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে তাঁরা এ মাংস উদ্ধার করেছেন এবং অভিযানে যেটুকু উদ্ধার হয়েছে, আদালতে সেটুকুই দেখানো হয়েছে।

কয়রার জোড়শিং লঞ্চঘাটের ইজারাদার মো. হাবিবুর রহমান জোড়শিং লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে হরিণের মাংস উদ্ধারের কোনো ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি করেন। সে সময় হরিণের মাংস জব্দের প্রকৃত তথ্য আড়াল করার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন বনরক্ষীরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.