১০ বছর ধরে চীন সীমান্তে গোপন মিসাইল ঘাঁটি বানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। নির্মাণ শুরুর ২১ বছর পর যা ধরতে পেরেছে পশ্চিমারা। বলা হচ্ছে— ঘাঁটিতে থাকা অন্তত ৯টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য।
সম্প্রতি ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’ (সিএসআইএস)— এর প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
মূলত, চীন সীমান্ত থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটারের দূরত্ব এই ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির। সরু পাহাড়ি উপত্যকার মাঝেই চলছে সামরিক কর্মযজ্ঞ। ২০০৪ সালে দুর্গম অঞ্চলটিতে মিসাইল ঘাঁটি বানানো শুরু করে পিয়ংইয়ং। যার কাজ শেষ হয় ২০১৪ সালে। বর্তমানের উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় ঘাঁটিগুলোর একটি সিনপুং-ডং মিসাইল বেইজ। দু’দিন আগেও যা অজানা ছিল বিশ্ববাসীর কাছে।
নির্মাণকাজের দুই দশক পর ঘাঁটির অস্তিত্ব প্রকাশ্যে আনলো ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা, সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ। বিশেষ প্রতিবেদনে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে সামরিক স্থাপনাটি। কেননা, এর অবস্থান একদম চীন ঘেঁষে। যেখানে হামলা চালাতে গেলে ক্ষতি হতে পারে চীনেও।
সিউল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লেইফ এরিক ইসলি বলেন, চীনের এত কাছে ঘাঁটি তৈরি করে উত্তর কোরিয়া হয়ত বেইজিংয়ের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তাকে কাজে লাগাতে চাইবে। এর মাধ্যমে তারা যেকোনো হামলা ঠেকানোর কৌশলও গ্রহণ করতে পারে।
২২ বর্গ কিলোমিটারের মিসাইল ঘাঁটিটি নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টের চেয়েও বড়। ধারণা করা হয় এখানে অন্তত ৯টি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রাখা আছে। যার মধ্যে থাকতে পারে পারমাণবিক সক্ষমতা সমৃদ্ধ হোয়াসং ফিফটিন বা এইটিন ক্ষেপণাস্ত্র। দাবি করা হয়, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
উল্লেখ্য, দুর্গম এই ঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে ট্রান্সপর্টার এবং মোবাইল লঞ্চার। যুদ্ধকালীন সময়ে যা দিয়ে দ্রুত স্থান বদল করে মিসাইল উৎক্ষেপণ করা যাবে। বলা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার অঘোষিত এমন আরও ১৫-২০টি ঘাঁটি রয়েছে। যেগুলো নর্থ কোরিয়ার মিসাইল বেল্টের অংশ।