জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেতা প্রবীর মিত্র ওরফে হাসান ইমামের প্রথম জানাজা এফডিসি ও দ্বিতীয় জানজা চ্যানেল আইয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর সোমবার (৬ জানুয়ারি) আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন।
এদিকে প্রবীর মিত্রকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে এফডিসিতে এসেছিলেন তার সহকর্মী সহ নবীন প্রবীণ চলচ্চিত্রকর্মীরা।
এফডিসিতে এই অভিনেতার জানাজায় উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীর, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চন, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, নির্মাতা ছটকু আহমেদ, খোরশেদ আলম খসরুসহ অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী ও এফডিসির কর্মকর্তা কর্মচারিরা।
প্রবীর মিত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস), চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি, ফিল্ম ক্লাব সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন।
সংকটাপন্ন অবস্থায় প্রবীর মিত্র রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, প্রবীর মিত্র দীর্ঘদিন ধরে শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২২ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রবীর মিত্র ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পুরান ঢাকায় বেড়ে উঠেছেন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। মূলত এ ছবিতে কাজের ব্যাপারে তার বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামানই তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এ ছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। এ কারণেই অনেকে তাকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’বলে ডাকেন।
তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- জীবন তৃষ্ণা, সীমার, তীর ভাঙা ঢেউ, প্রতিজ্ঞা, অঙ্গার, পুত্রবধূ, নয়নের আলো, চাষীর মেয়ে, দুই পয়সার আলতা, আবদার, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ ইত্যাদি।অনলাইন ফিল্ম স্ট্রিমিং পরিষেবা
কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।