দেশের চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রফতানির ক্ষেত্রে চরম সংকটে পড়েছে খুলনা অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক খাত চিংড়ি শিল্প। গত এক সপ্তাহে শুধু চিংড়ি রফতানি খাতেই ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে দাবি করছেন খুলনা অঞ্চলের এ খাতের ব্যবসায়ীরা।
টানা কারফিউ আর ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের প্রভাব পড়েছে খুলনা অঞ্চলের চিংড়ি রফতানি খাতে। প্রক্রিয়াজাত করার পর হিমায়িত চিংড়ি পড়ে রয়েছে ফ্যাক্টরিতেই। পরিবহন সংকটে গত এক সপ্তাহে এ অঞ্চল থেকে চিংড়ি রফতানি করা সম্ভব হয়নি। ব্যবসায়ীদের দাবি, গত এক সপ্তাহে পূর্ব নির্ধারিত ৩৫ থেকে ৪০ কন্টেইনারে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি রফতানি করার কথা ছিল। কিন্তু তা তারা পারেননি। এতে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, চিংড়ি পচে যায়নি, তবে নির্ধারিত সময়ে এগুলো শিপমেন্ট করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রক্রিয়াজাত করা চিংড়ি- ফ্যাক্টরিতেই পড়ে আছে।
রফতানিকারকরা বলছেন, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় বিদেশি ক্রেতারা যোগাযোগ করতে পারছেন না। ফলে অর্ডার ক্যানসেল হচ্ছে একের পর এক। এসব ক্রেতা অন্য দেশ থেকে নতুন অর্ডার নিচ্ছেন। ফলে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এ খাতে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুজন আহমেদ বলেন, ‘ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে, বিদেশি ক্রেতারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। ফলে তারা অন্য দেশে যোগাযোগ করছেন। আর আমাদের অর্ডারগুলো বাতিল হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে খুলনা অঞ্চল থেকে ৩৫ থেকে ৪০ কন্টেইনার চিংড়ি আমরা রফতানি করতে পারেনি। যার আনুমানিক পরিমাণ ৩ হাজার মেট্রিক টন। এতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় শত কোটি টাকা। তবে সব থেকে বড় ক্ষতি, বিদেশি ক্রেতারা আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, যার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে এ খাতে।’
তবে মৎস্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে পুনরায় রফতানি স্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টার কথা জানানো হয়। মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারি পরিচালক লিপটন আহমেদ বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতির ওপর আমাদের কারও হাত ছিল না। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। রফতানি আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, দ্রুত সবকিছু স্বাভবিক হয়ে আসবে।’
আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল