সাতক্ষীরায় ২২৫ কোটি টাকার আমের বাজার

এম কামরুজ্জামান, সাতক্ষীরা

0
103
আম।

চলতি বছর সাতক্ষীরার বড় বাজারের আড়তে যে পরিমাণ আম আসছে প্রতিদিন, আগের বছরগুলোয় তেমন দেখা যায়নি। রেকর্ড পরিমাণ ফল বাজারে আসছে; দামও কম। গত বছর যে আম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, এবার তা ৪০ থেকে ৫০ টাকা। প্রতিদিন ৩০-৪০ ট্রাক আম জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন বাজারে যাচ্ছে। কথাগুলো বলছিলেন বড় বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম।

সাতক্ষীরার আম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে। আট বছর ধরে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে এ আম। মাটির গুণ ও অনুকূল আবহাওয়ায় এ জেলায় উৎপাদিত আম বেশ সুস্বাদু। স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফল সুনাম কুড়িয়েছে ভোক্তা-মহলে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে থোকায় থোকায় আম ধরেছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, এবার চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ টন। প্রতিদিন জেলা থেকে ট্রাকে এ ফল দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর সাতক্ষীরায় যে পরিমাণ আম হয়েছে, তা যথাযথভাবে বাজারজাত করতে পারলে ২২৫ কোটি টাকায় বিক্রি হবে।

সদরের কামালনগর গ্রামের চাষি অজিয়ার রহমান বলেন, এ বছর আমের মুকুল বেশি হওয়ায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় অন্য বছরের তুলনায় অধিক ফলন হয়েছে। বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও পাঠানো যাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ বছর নবমবারের মতো ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে যাবে এ জেলার আম। জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী ৫ মে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই, গোপালখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম সংগ্রহ করা হয়েছে। আর ২৫ মে হিমসাগর, ১ জুন ল্যাংড়া এবং ১৫ জুন আম্রপালি সংগ্রহের সময় নির্ধারিত রয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় আম চাষ করেছেন ১৩ হাজার ১০০ জন চাষি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় এক হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৫, তালায় ৭১৫, দেবহাটায় ৩৭০, কালীগঞ্জে ৮৩৫, আশাশুনিতে ১৪৫ ও শ্যামনগরে ১৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।

সুলতানপুর বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমের আকার ও দামে তারতম্য রয়েছে। দেখতে সুন্দর ও বড় আম বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ২২শ থেকে ২৪শ টাকায়। পাশাপাশি মাঝারি ১৮শ থেকে ২ হাজার, ১৪শ থেকে ১৬শ এবং ছোট আকারের আম ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, এবার আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার ২০০ টন আম বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। নির্ধারিত সময়ে আম সংগ্রহ করা হলে বিদেশে সুনাম ধরে রাখা সম্ভব হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.