ইউরোপের কর্তৃত্ব নাকি লাতিনের জাগরণ

0
123
আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স

লাতিনের দলগুলোকে এক সুতোয় গেঁথে দিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বছরের শুরুতে তার এক মন্তব্য দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলারদের তাতিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, ইউরোপের মতো লাতিনের ফুটবল এগোয়নি। ২০ বছরের ইতিহাস টেনে তিনি জানান, সেজন্য তারা বিশ্বকাপ জিততে পারেনি।

এমবাপ্পের কথা তো মিথ্যা নয়। ২০০২ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ওই ব্রাজিল পরের পাঁচ আসরে ফাইনালের মুখ দেখেনি। নিজেদের মহাদেশে আর্জেন্টিনা ২০১৪ বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠেও জিততে পারেনি। রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা শেষ ষোলোয় এবং ব্রাজিল শেষ আটে বিদায় নিয়েছিল।

তবু ফুটবলে একসময় কর্তৃত্ব করা লাতিন অঞ্চল এমবাপ্পের কথা মানবে কেন? তারা এটাকে ‘অপমান’ হিসেবে নিয়েছে। গত মার্চে এমবাপ্পের মন্তব্য নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন লিভারপুলে খেলা ব্রাজিলের ফ্যাবিনহো। এপ্রিলে লওতারো মার্টিনেজ ওই মন্তব্য নিয়ে পাল্টা দিয়েছেন। শনিবার কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে এমবাপ্পের এক হাত নিয়েছেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

তিনি এমবাপ্পের উদ্দেশ্যে বলেছেন, লাতিনের দলের বিপক্ষে নিয়মিত না খেলে, তাদের ফুটবল সম্পর্কে ভালো মতো না জেনে ওমন মন্তব্য ঠিক নয়। এমবাপ্পের ওই মন্তব্যের পরে লিওনেল মেসি, আলভারেজরা নিশ্চয় লাতিনের সৌরভ মাখা ফুটবল দেখাতে মুখিয়ে আছেন। তেতে আছেন এমি মার্টিনেজরা। আর্জেন্টিনার সামনে এমবাপ্পের মুখ থেকে কথা ফুরাতে না ফুরাতেই জবাব দেওয়ার পালা।

এমবাপ্পের ওই মন্তব্যের কারণেই হয়তো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের অনেকে মেসি এবং তার আর্জেন্টিনার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। কিংবদন্তি পেলে থেকে কাফু জানিয়ে দিয়েছেন, তারা মেসির হাতে শিরোপা চান। তারা চান লাতিনের প্রতিনিধি আর্জেন্টিনায় বিশ্বকাপ আসুক। কিছু ব্যতিক্রমও আছে। সাবেক ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক হুলিও সিজার যেমন আর্জেন্টিনার সমর্থন দিতে পারছেন না।

তিনি মানুক বা না মানুক আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় মানে হবে লাতিন ফুটবলের নতুন জাগরণ। ইউরোপের ১৬ দলের কর্তৃত্ব ভেঙে জয় হবে লাতিন ফুটবলের পুর্নজন্ম। ইউরোপের ফুটবল যদি আধুনিক, গতিময় ও কৌশলের ফুটবল হয় তাতে রোনালদো নাজারিও-রোনালদিনহো, তেভেজ-ভেরন থেকে মেসি-নেইমার জুনিয়রদের অনেক অবদান।

ইউরোপের ফুটবলে লাতিনের কোচদের অবদানও কম নয়। হালের ডিয়াগো সিমিওনে, মাউরিসিও পচেত্তিনো পাল্লা দিয়ে ইউরোপিয়ান কোচদের সঙ্গে ইউরোপের লিগে কৌশলের মারপ্যাচ দেখিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় দলের হয়ে তবে লিওনেল মেসি, লিওনেল স্কালোনি কেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, দিদিয়ের দেশমের কৌশল ভাঙতে পারবেন না?  ফ্রান্স-আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ ফাইনালে লাতিন-ইউরোপ দ্বন্দ্বে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে। দীর্ঘ হতে পারে ইউরোপের কর্তৃত্ব। শুরু হতে পারে নতুন বিতর্ক।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.