‘চলচ্চিত্র উৎসবের শুরুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আমাকে মুগ্ধ করেছে’

0
133
অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর

‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগানে শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে পর্দা উঠেছে ২২তম ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বলিউডের প্রখ্যাত বাঙালি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। উৎসবের এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগের বিচারক হিসেবে আছেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শর্মিলা ঠাকুর বলেন, আমি এই সুন্দর শহর ঢাকায় এসে খুবই খুশি। তবে এই সুন্দর শহরে আসা প্রায় বাতিল হতে বসেছিল! গতকাল যখন আমি দিল্লি বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম, আমাকে বলা হলো কুয়াশার কারণে ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বাইরে তখন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। পরবর্তী ফ্লাইট ছিল আজকে; যদি পরের এই ফ্লাইট ধরতাম, তাহলে আজকের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারতাম না। পরে বাংলাদেশ বিমানের সহযোগিতায় ঢাকায় আসতে পেরেছি। একটা অ্যাডভেঞ্চার দিয়ে জার্নিটা শুরু হয়েছিল।

দ্বিতীয় অ্যাডভেঞ্চারের বর্ণনায় শর্মিলা বলেছেন, আমাকে উৎসবের পরিচালক বলেছেন, হোটেল থেকে ভেন্যু হেঁটে গেলে মাত্র দুই মিনিট, আর গাড়িতে পাঁচ মিনিট। কিন্তু কোনো কারণে আমরা একটা ভুল মোড় নিয়ে ফেলি। যার কারণে আমরা প্রায় ৩৫ মিনিট দেরিতে পৌঁছলাম। এটা একরকম অ্যাডভেঞ্চারই ছিল। ঢাকার কিছু রূপও দেখা হয়ে গেল।

হাসিমাখা মুখে ঘটনাগুলো যখন বলছিলেন শর্মিলা, তখন তার কাছে একটি আরজি রাখেন ঢাকা উৎসবের পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। অনুরোধটা বাংলায় কথা বলার। কিন্তু বিনয়ের সঙ্গেই সেটা ফিরিয়ে দেন অভিনেত্রী।

শর্মিলা ঠাকুরের ভাষ্য, আমি বাংলায় কেন বলব, এটা তো আন্তর্জাতিক উৎসব। আর সবাই জানে, আমি বাংলা বলতে জানি। ইংরেজি তো আন্তর্জাতিক ভাষা, সবাই বোঝে। প্লিজ মাফ করবেন।

প্রশংসা করেন উদ্বোধনী আয়োজনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার শর্মিলা। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র উৎসবের এই শুরুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আমাকে মুগ্ধ করেছে। পুরনো চলচ্চিত্রের গানগুলো দিয়ে এই আয়োজন খুব ভালো লেগেছে। একটি সমাজের জন্য, একটি জাতির জন্য নিজের সংস্কৃতি তুলে ধরার চলচ্চিত্র ছাড়া আর কোনো ভালো মাধ্যম হতে পারে না। কারণ একমাত্র চলচ্চিত্রের কোনো ভাষা নেই। সেটা বাংলা, ইংরেজি, চায়নিজ, হিন্দি যা-ই হোক না কেন দর্শক চলচ্চিত্র খুব সহজেই বুঝতে পারে।

প্রসঙ্গত, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবের এবারের আসরে ৭৪টি দেশের আড়াই শ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এর মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য ১২৯টি, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র ১২৩টি। এর মধ্যে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ৭১টি। উৎসবের চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা, নৃত্যশালা মিলনায়তন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাডেমি মিলনায়তনে।

এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, ট্রিবিউট, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেনস ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম ও উইমেনস ফিল্ম সেশনে প্রদর্শিত হবে ছবিগুলো।

উদ্বোধনী দিন দেখানো হয়েছে মুর্তজা অতাশ জমজম পরিচালিত ও জয়া আহসান অভিনীত ‘ফেরেশতে’ ও শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব—একটি জাতির রূপকার’। উৎসবের সব প্রদর্শনীই বিনা মূল্যে উপভোগ করতে পারবে দর্শক। আসনসংখ্যা সীমিত থাকায় ‘আগে এলে আগে দেখবেন’ ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে। উৎসব চলবে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.