শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিট থেকে ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে শুরু হচ্ছে এই ভর্তিযুদ্ধ। শাটল ট্রেনের সময়সূচি বিপর্যয় হওয়ায় ১৫ মিনিট পর শুরু হয়েছে নির্ধারিত পরীক্ষা। দুপুর ৩.৩০ মিনিট থেকে শুরু হবে এ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা।
বেলা সাড়ে ১১টায় পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডি। হল পরিদর্শনের সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ক্যাম্পাসে। সোমবার রাতে অতি বৃষ্টির কারণে শাটল ট্রেনে কিছু সমস্যা হয়েছিল। ফলে শাটল ছাড়তে ১৫ মিনিট দেরি করায় পরীক্ষাও ১৫ মিনিট পর শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ হাজার ৯২৬টি আসনের বিপরীতে মোট পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৫৬ জন। সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার জানান, ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ সদস্য থাকবেন ৩৫০ জন, ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও অগ্নিনির্বাপক সদস্য থাকবেন ৩০ জন, রেলওয়ে পুলিশ থাকবে ৩০ জন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী থাকবেন ১৩০ জন। এ ছাড়া সাদা পোশাকেও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন।
আট নির্দেশনা: ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য আটটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হলো—
প্রবেশপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে লগইন করে ভর্তি পরীক্ষার ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে নিজ আসনের অবস্থান জানতে পারবেন। আসনবিন্যাস দেখার আগে অবশ্যই প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে হবে।
প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর ডাউনলোড করা দুই কপি প্রবেশপত্র, পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি (প্রবেশপত্রে আঠা/পিন দিয়ে লাগিয়ে) ও উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার মূল নিবন্ধন সনদ ভর্তি পরীক্ষার দিন অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীরা এফএক্স-১০০ বা এর নিচে সাধারণ মানের (মেমোরি অপশন ছাড়া) ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে মুঠোফোন, ক্যালকুলেটর (মেমোরি অপশন/সিম থাকা), ইলেকট্রনিক ডিভাইস আছে—এমন ঘড়ি ও কলম বা যেকোনো ধরনের ডিভাইস রাখা নিষিদ্ধ।
ক্যাম্পাসে আসা সব পরীক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সার্বক্ষণিক মাস্ক পরতে হবে।
অপ্রত্যাশিত ভিড় ও শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে একজনের বেশি অভিভাবক ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না।
প্রশ্নপত্র ফাঁসসংক্রান্ত বিষয়ে কারও কাছে কোনো অভিযোগ দৃষ্টিগোচর হলে তা প্রথম ও দ্বিতীয় শিফটে নির্ধারিত পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময়ের ন্যূনতম এক ঘণ্টা আগে প্রমাণাদিসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিট কো-অর্ডিনেটরের কাছে লিখিত অভিযোগ করা যাবে। এ সময়ের পর পরীক্ষা বা প্রশ্নপত্রসংক্রান্ত কোনো অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না।
ভর্তি পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
নিরাপত্তার স্বার্থে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা অভিভাবককে তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা নিজস্ব পরিচয়পত্র (যদি থাকে) সার্বক্ষণিক সঙ্গে রাখতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
শাটলের সময়সূচি: ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে দৈনিক ৯ বার নগরের বটতলী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসা–যাওয়া করবে শাটল ট্রেন। ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২ ও ২৩ মে এই সাত দিন ট্রেন নয়বার যাওয়া–আসা করবে। এই দিনগুলোতে নগরের বটতলী থেকে সকাল ৬টা, সকাল সাড়ে ৬টা, সকাল সোয়া ৮টা, সকাল পৌনে ৯টা, বেলা ১১টা ৪০ মিনিট, দুপুর ১২টা, বেলা ৩টা, বিকেল ৪টা ও রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।
আবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সকাল ৭টা ৫ মিনিট, সকাল ৭টা ৩৫ মিনিট, সকাল ৯টা ২০ মিনিট, সকাল ১০টা, বেলা ১টা, বেলা দেড়টা, বিকেল ৫টা, বিকেল সাড়ে ৫টা ও রাত ৯টা ১০ মিনিটে নগরের বটতলীর উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
অন্যদিকে ২১, ২৪ ও ২৫ মে এই তিন দিন শাটল যাওয়া–আসা করবে সাতবার। সকাল সাড়ে ৭টা, সকাল ৮টা, সকাল ১০টা ৫ মিনিট, সকাল ১০টা ৪০ মিনিট, বেলা ২টা ৫০ মিনিট, বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট ও রাত সাড়ে ৮টায় নগরের বটতলী থেকে ট্রেনটি ছাড়বে। এ ছাড়া ক্যাম্পাস থেকে ছাড়বে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট, সকাল ৯টা ২০ মিনিট, বেলা দেড়টা, বেলা আড়াইটা, বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট, বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট ও রাত সাড়ে ৯টায়। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় এক ঘন্টা সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শাট ট্রেন পৌছে যায় । শাটল ছাড়াও নগরীর দুই নম্বর গেট ও মুরাদপুর থেকে গণপরিবহন বাসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে।