চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পূর্ব বিরোধের জেরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে জড়ানো ছাত্রলীগের গ্রুপ দুটি হলো শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত সিক্সটি নাইন।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত নীলফামারী জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘নীলফামারী জেলা ছাত্র বান্ধব’র নেতৃত্ব নিয়ে প্রায় এক বছর আগে দুই কর্মীর মাঝে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাটি ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিএফসির অনুসারী রাশেদ আল কোরানীর সঙ্গে সিক্সটি নাইনের অনুসারী ও সংস্কৃত বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী কাজল রয়ের সঙ্গে। এ সময় রাশেদ আল কোরানীর বিরুদ্ধে কাজলকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল।
শুক্রবার রাশেদ আল কোরানী সদ্য স্নাতকোত্তর পাস করে ক্যাম্পাস ছেড়ে যাবেন এমন কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন এলাকায় রাশেদের সঙ্গে আবার কাজলের কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে সিক্সটি নাইনের নেতাকর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে লাঠিসোঁটা ও রামদা নিয়ে অবস্থান নেন। আর সিএফসির নেতাকর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নেন। এ দুটি হলের অবস্থান পাশাপাশি। এক পর্যায়ে গ্রুপ দুটির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে সিক্সটি নাইন গ্রুপের তিনজন আর সিফসি গ্রুপের তিনজন আহত হন।
জানতে চাইলে সিএফসির অনুসারী রাশেদ আল কোরানী বলেন, ‘এক বছর আগে কাজল আমার সঙ্গে অসদাচরণ করেছিল। এ কারণে আমি রেগে গিয়ে কাজলকে থাপ্পড় দিয়েছিলাম। পরে এ ঘটনার সমাধান হয়ে যায়। তবে বৃহস্পতিবার রাতে কাজল আমার ওপর হঠাৎ করে হামলা করেছে। দলবল নিয়ে মারধর করেছে৷’
এই অভিযোগ অস্বীকার করেন সিক্সটি নাইনের কর্মী কাজল রয়। তিনি বলেন, ‘রাশেদ আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় অসদাচরণ করে। বৃহস্পতিবারও করেছে। এ কারণে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।’
এদিকে ছাত্রলীগের এই সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। জানতে চাইলে চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক শুভাশিস চৌধুরীও বলেন, ‘একজনের মাথায় ইটের আঘাত লেগেছিল। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে রাত প্রায় ১২টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক৷ দুই গ্রুপই হলে অবস্থান করছেন।’