চট্টগ্রামে যে কারণে বেড়েছে চালের দাম

0
68
বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে নানা ধরনের চাল। আজ সকালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বাজারে চালের আড়তে

চট্টগ্রামের বাজারে রোজার আগে বেড়েছে চালের দাম। গত এক সপ্তাহে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালের দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এ ছাড়া খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজিতে বেড়েছে চার থেকে সাত টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচনের পর থেকেই বাজারে চালের দাম বাড়ছে।

তবে চালের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন ধানের দাম বেড়ে যাওয়া ও কিছু করপোরেট কোম্পানির ধান মজুত করে রাখাকে। চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনের আগে ১ হাজার ২০০ টাকার আশপাশে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ধান কেনা যেত। নির্বাচনের পরপর মণপ্রতি ধানে দাম বেড়েছে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ফলে মিল পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছে।

চট্টগ্রামের চালের আড়ত নগরের পাহাড়তলী ও চাক্তাই এলাকায়। এর মধ্যে চাক্তাই এলাকায় কয়েকটি চালকল রয়েছে। এই দুই আড়ত থেকে চট্টগ্রামের অন্যান্য বাজারে চাল সরবরাহ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার এই দুই আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে সেদ্ধ চাল ভেদে বস্তাপ্রতি প্রায় ২০০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া আতপে বেড়েছে প্রায় ১৫০ টাকা।

চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম বলেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা চালের দামেও প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানিগুলো ধানের মজুত করায় ধানের বাজারেও সংকট। তবে গত দু-এক দিনে বাজারে কেজিপ্রতি চালে ১ থেকে ২ টাকা কমেছে।

খরচ যত, দাম তত

চাক্তাই ও পাহাড়তলী এলাকায় গুটি স্বর্ণা চালের প্রতি বস্তা ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৪৮ টাকা। তবে এক সপ্তাহ আগেও এই চাল বিক্রি হয়েছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকায়।
এ ছাড়া স্বর্ণা–৫ প্রায় ২৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই চাল প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া মিনিকেট (সেদ্ধ) প্রতি কেজি ৫৪ টাকা, মিনিকেট (আতপ) ৫৭, পাইজাম (আতপ) ৫২, আটাশ-১ ও ২ ৪৯ টাকা ও জিরাশাইল ৬৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব চালে এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে চার থেকে সাত টাকা।

চাক্তাই এলাকার চালকল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধান ভেদে প্রতি ১০০ কেজিতে ৬৪ থেকে ৬৮ কেজি চাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে মোটা চালের ক্ষেত্রে খরচ পড়ে প্রতি কেজি অন্তত ৪৬ টাকা ও চিকন চালের ক্ষেত্রে অন্তত ৫৬ টাকা। এর সঙ্গে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ যোগ হয়।

চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, চালের ক্ষেত্রে প্রধান কাঁচামাল ধান। ধানের দাম বাড়লে চালের দামে প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া বর্তমানে ধান থেকে চাল উৎপাদনের খরচও বেড়েছে।

এদিকে বাজার তদারকিতে গত সোমবার চট্টগ্রামের বাজারে অভিযান চালায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সে সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির জন্য অভিযোগ উঠেছে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের দিকে। তাঁরা বাজারে ধীরে ধীরে চাল ছাড়ছেন। চাহিদার চেয়ে জোগান কম হওয়ায় কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে, এতে বাড়ছে চালের দাম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.