বাড়তি দামে সরকারি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাস বিক্রি করা ও চালান রসিদ না রাখার অভিযোগে দুই পরিবেশক প্রতিষ্ঠানকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি এলপি গ্যাস বিক্রির লাইসেন্সবিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করতে না পারায় আরও ৪ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার নগরের ডবলমুরিং, হালিশহর ও পাহাড়তলী থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিমন সরকার অভিযান পরিচালনা করেন। এতে সুমন এন্টারপ্রাইজ ও মনজুর আলম ট্রেডার্স নামের দুই প্রতিষ্ঠানকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্য চার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলী অ্যান্ড সন্স, মেসার্স খাজা ট্রেডার্স, মেসার্স ছালেখা করপোরেশন ও লাকী এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্সের কাগজপত্র যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিমন সরকার বলেন, দুই প্রতিষ্ঠান বিক্রয়ের চালান ও রসিদ দেখাতে পারেনি। বাড়তি দরে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছিল। তাই জরিমানা ও সতর্ক করা হয়েছে। অন্য চার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে লাইসেন্সের কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। কোনোটিতে আবার মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশে সরকারি-বেসরকারি—দুভাবে এলপি গ্যাস বিক্রি হয়। সরকারি এলপি গ্যাস পরিবেশকদের কাছে বিক্রি করে বিপিসির চার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। এই চার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হলো পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ও স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এসএওসিএল)। চার কোম্পানিতে এলপি গ্যাস পরিবেশকের সংখ্যা ৩ হাজার ১০১। এলপি গ্যাস বিক্রি করতে পরিবেশকদের বিস্ফোরক পরিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। গত পাঁচ বছরে সরকারি এলপি গ্যাস বিক্রি হয়েছে ৫২ হাজার ২৩০ টন বা ৫ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার কেজি।
সাড়ে ১২ কেজি ওজনের গ্যাস সরকারি চার প্রতিষ্ঠান থেকে কিনতে পরিবেশকদের কোম্পানি পর্যায়ে বর্তমানে খরচ হয় ৭৮৪ টাকা। আরও কিছু খরচ যুক্ত হয়ে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করার কথা ৮২৫ টাকায়। কিন্তু এ দামে ভোক্তারা গ্যাস পান না। তাঁদের কিনতে হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। এ নিয়ে ১৩ মে প্রথম আলোয় ‘সরকারি এলপিজিরও বাড়তি দাম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।