ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ কখন, কোন দিক দিয়ে যাবে

0
138
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’

বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। এটি আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দূরে ছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ দুপুরের দিকেই ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে। আজ সন্ধ্যা নাগাদ এটি পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছে দিয়ে মোংলা ও পায়রা উপকূল ছাড়াবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়ার সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে এগিয়ে একই এলাকায় আছে। এটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ খেপুপাড়ার কাছে দিয়ে মোংলা ও পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর অগ্রভাগ দুপুরের মধ্যেই উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে দেশের আট উপকূলীয় জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ইতিমধ্যে এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আজ সকাল ৯টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন আজ সকালে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। জলোচ্ছ্বাসে এসব অঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস সূত্র বলছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হচ্ছে।

গত ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি এবং বসতবাড়ি ও ফসলও নষ্ট হয়। এরপর আবার নতুন আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আসছে।

তবে মিধিলি খুব বড় আকারের ঘূর্ণিঝড় হবে না বলে গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান। এর সম্ভাব্য প্রভাব ও প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল সভা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছের এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এ জন্য পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.