ঘর পেলেন আরও ২২ হাজার পরিবার, ১২৩ উপজেলা গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা

0
167
বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্যাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প

ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আরও ২২ হাজার ১০১টি পরিবার নতুন ঘর পেলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে এসব ঘর দেওয়া হলো।

বুধবার বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা এসব ঘর পরিবারগুলোর কাছে তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগীদের মাঝে এসব ঘর হস্তান্তর করেন।

একই সঙ্গে দেশের ১২৩টি উপজেলাকে সম্পূর্ণ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান। এর মধ্যে ১২টি জেলার সব উপজেলা ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হলো।

ভিডিও কনফারেন্সে তিনটি আশ্রয়ণ প্রকল্প– খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত সোনার বাংলা পল্লি, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্ল্যাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমান উল্যাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিজ ঘরে এক উপকারভোগী

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্যাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে সমকাল প্রতিবেদক জানিয়েছেন, সেখানে ৫০টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের কাছে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘর পেয়ে এসব পরিবারের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে না’– প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালের মে মাসে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ৬৩ হাজার ৯৯৯টি একক গৃহ হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে ৭৪৩টি ব্যারাকে ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসনও করা হয়। একই বছরের জুনে দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণ করা ঘরের সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ৬৭৪টি। চলতি বছরের মার্চে চতুর্থ পর্যায়ের ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। এ পর্যায়ের অবশিষ্ট ঘর বুধবার হস্তান্তর করা হলো।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া সোমবার সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই প্রকল্পের আওতায় চারটি পর্যায়ে এরই মধ্যে সারাদেশে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১টি পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবারে গড়ে পাঁচজন করে সদস্য হিসাবে মোট ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৩৫ জন ছিন্নমূল মানুষ পুনর্বাসিত হয়েছেন। উপকারভোগীর সংখ্যা ও পুনর্বাসন পদ্ধতি বিবেচনায় এটি বিশ্বের বৃহত্তম সরকারি পুনর্বাসন কর্মসূচি।

তিনি জানান, চতুর্থ পর্যায়ের ঘরগুলো হস্তান্তরের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা সম্পূর্ণ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হয়। এর আগে দুই দফায় আরও ৯টি জেলার সব উপজেলাসহ মোট ২১১টি উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

মুখ্য সচিব আরও জানান, মুজিববর্ষের বিশেষ কর্মসূচি হিসেবে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় অবৈধ দখলে থাকা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে গৃহহীনদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। সারাদেশে এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা খাস জমির পরিমাণ ৬ হাজার ২০০ একর। যার আনুমানিক স্থানীয় বাজার মূল্য ৩ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া আরও ৩২৩ একর জমি কিনে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে, যার বাজার মূল্য ২১৫ কোটি টাকা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.