![Screenshot 2025-02-08 194728](https://dailyprovatalo.com/wp-content/uploads/2025/02/Screenshot-2025-02-08-194728-696x468.png)
সামনে সুদিন আসছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বৈপ্লবিক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। তরুণদের এখন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নে অংশ নেওয়া ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশীদার হওয়ার সময়। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে সে অনুযায়ী দেশপ্রেম নিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।
আজ শনিবার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) ২৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী এম আমিনুল ইসলাম। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আইইউবি ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ১ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থীকে সনদ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ৫৫০ জন স্নাতক ও ৪১৯ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন এবং শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, সামনে সুদিন আসছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বৈপ্লবিক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর যাঁরা সক্ষম, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। বাকিরা ডিপ্লোমা ও কারিগরি শিক্ষা নিতে যাবেন।
কারিগরি বিষয়ে গবেষণা, বিদেশে চাকরির জন্য পাঠানো, জনগোষ্ঠীকে কারিগরি দিক দিয়ে দক্ষ হিসেবে কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তা দেখার জন্য তাঁকে চেয়ারম্যান করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে গোটা বাংলাদেশের চিত্র বদলে যাবে। দেশে বেকার থাকবে না। শিল্পায়ন হবে। বিশ্বে এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব চলছে। সামনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস বিপ্লব হবে। বাংলাদেশকে এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে সে অনুযায়ী দেশপ্রেম নিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরদের জন্য আজ নতুন দিনের সূচনা হয়েছে। তরুণদের এখন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নে অংশ নেওয়া এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশীদার হওয়ার সময়। বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তরুণেরা পথ দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ যা রয়েছে তা আমরা অতিক্রম করতে পারব। ব্যাংকে গুরুতর সমস্যা রয়েছে, মূল্যস্ফীতি রয়েছে। তবে রেকর্ড রেমিট্যান্স রয়েছে। মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, সুশাসন, দক্ষ শিক্ষক ও তথ্যপ্রযুক্তিগত সুবিধায় পরিপূর্ণ এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা ভালো যা শিখেছেন, তা সমাজের জন্য প্রয়োগ করবেন। নীতি–নৈতিকতা, দায়িত্ব, সৃষ্টিশীলতা, উদ্ভাবন ও নতুন নতুন ভাবনার মধ্য দিয়ে এই তরুণেরাই দেশ গঠন করবেন। সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তরুণেরা বিশ্ববাজারে আবির্ভূত হবেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক ম তামিম বলেন, ‘দেশ ও জাতি গঠনে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার এখনই সময়। তোমরা কৌতূহলী হও, শিখতে থাকো এবং সামনে এগোতে থাকো। কৌতূহলী না হলে কিছু শিখতে পারবে না। তোমাদের কাঁধে এখন অনেক দায়িত্ব। নিজের জন্য, পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য তোমাদের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন বলেন, ‘এখনই সময় তোমাদের গৌরব উদ্যাপনের। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। যারা সুবিধাবঞ্চিত তাদের পাশে সহায়তার হাত নিয়ে দাঁড়াতে হবে, তারা যেন অনুভব করে যে তারা একা নয়।’
অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ট্রাস্টের (ইএসটিসিডিটি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান বলেন, অপরকে শান্তি দেওয়ার মাধ্যমে নিজে শান্তি পাওয়া যায়। তরুণদের সব সময় সত্য কথা বলার এবং ভুল কিছু হচ্ছে মনে হলে ‘না’ বলার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় অনুষদের ডিন বক্তব্য দেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইইউবির কোষাধ্যক্ষ খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার। সমাবর্তন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইইউবির রেজিস্ট্রার মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
কৃতিত্বপূর্ণ ফল অর্জনের জন্য দুই স্নাতক শিক্ষার্থী—ফার্মেসি বিভাগের সামিয়া আক্তার ও ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাংগুয়েজেস বিভাগের রাবিয়াহ বিনতে হোসাইন চ্যান্সেলরস গোল্ড মেডেল পান। অলরাউন্ডার অ্যাওয়ার্ড ও স্বর্ণপদক লাভ করেন মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন ও গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিভাগের নাজিফা রাইদাহ।
স্নাতক পর্যায়ে অসাধারণ ফলাফলের জন্য নিশাত রামিসা ইসলাম, আতিকা হুমাইরা, আশরাফি আঞ্জুমান, উম্মুল ওয়ারা, শেখ মুস্তারীন মুস্তান মর্তুজা, নায়লা নুরেন এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অসাধারণ ফলাফলের জন্য তাসমিন তাবাসসুম, তাহসিন তাবাসসুম, আবদুল্লাহ আল মামুন, তাহেরা জোবাইদা মালিহা, মাইশা ইসলামকে পুরস্কৃত করা হয়।
একাডেমিক স্বীকৃতির পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে সফল শিক্ষার্থীদেরও সম্মাননা দেওয়া হয়। সমাজসেবায় পুরস্কার লাভ করেন উম্মুল ওয়ারা, নাফিসা তাবাসুম ও নাজরানা খান। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সম্মাননা পান নাজরানা খান ও ফাহমিদা বিনতে আজাদ। স্পোর্টস অ্যাকটিভিটিস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় শারমিন ইসলাম, তাশফিয়া তাসনিম ও জান্নাতুল মাওয়াকে।