এবার গুগলের বিরুদ্ধে বিশ্বের ১৩টি দেশের ৩২টি মিডিয়া গোষ্ঠী ২৩০ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছে। তাদের অভিযোগ, গুগলের বিজ্ঞাপনপ্রযুক্তির কারণে তাদের সমূহ ক্ষতি হচ্ছে।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, যেসব দেশের গণমাধ্যম গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তার সব কটিই ইউরোপের দেশ। দেশগুলো হলো অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, স্পেন ও সুইডেন। এ মামলা এমন সময়ে হয়েছে, যখন বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে গুগলের বিজ্ঞাপনপ্রযুক্তি ব্যবসার বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রকেরা খড়্গহস্ত।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী জেরাডিন পার্টনার্স অ্যান্ড স্টেক বলেছে, যেসব কোম্পানি গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তারা বিজ্ঞাপনের জগতে প্রতিযোগিতা কমে যাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গুগলের ব্যবসায়িক অসদাচরণের কারণে এটা হয়েছে।
আইনজীবী প্রতিষ্ঠান আরও বলেছে, গুগল নিজের প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার না করলে এই মিডিয়া কোম্পানিগুলো আরও বেশি অর্থ আয় করতে পারত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে তারা যে অতিরিক্ত রাজস্ব পেত, তা ইউরোপের মিডিয়া জগৎ শক্তিশালী করতে ব্যবহার করা সম্ভব হতো।
এদিকে গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই মামলার মধ্যে যেমন সুবিধাবাদ আছে, তেমনি মামলাটি অনুমানভিত্তিক। তারা আরও বলেছে, গুগল ইউরোপের প্রকাশকদের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত হয়। তাদের সঙ্গে কাজের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গুগলের ব্যবসার মূল খাত হচ্ছে বিজ্ঞাপনপ্রযুক্তির ব্যবসা। কিন্তু সম্প্রতি জেনারেটিভ এআই চ্যাট চালু হওয়ার পর থেকে গুগলের এই ব্যবসাও এখন হুমকির সম্মুখীন বলে বলা হচ্ছে।
এর আগে ২০২১ সালের ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কমিশন বিজ্ঞাপনপ্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে গুগলকে ২২ কোটি ইউরো জরিমানা করেছিল। সেই সঙ্গে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই কারণে গুগলকে জরিমানা করে। যদিও গুগল বরাবর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মিডিয়া গোষ্ঠীগুলোর মামলায় এসব বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে।
গুগলের বিরুদ্ধে এমন মামলা ও অভিযোগ নতুন কিছু নয়। গত কয়েক বছরেই তাদের বিরুদ্ধে দেশে দেশে মামলা হচ্ছে। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও কয়েক ডজন রাজ্য অভিযোগ তোলে, অনলাইনে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে গুগল প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট করেছে। অভিযোগে বলা হয়, তারা বিভিন্ন তারহীন সেবাপ্রদানকারী ও স্মার্টফোন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে গ্রাহকদের গুগলের ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে ব্যবহারে বাধ্য করেছে। এরপর এসব অভিযোগ একত্র করে একটি মামলা করা হয়।