টানা ৩২ ঘণ্টার আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী টায়ার্সের কারখানাটি। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাটি পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক।
এসময় তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ভবনের ভেতরে উদ্ধার অভিযান শুরু করবে ফায়ার সার্ভিস। পাশাপাশি নিখোঁজদের তালিকাকরণে অনুসন্ধান সেল গঠন করা হবে।
এর আগে সকালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভেছে। তবে, ভবনটির অবস্থা নাজুক। ভবনটা বেঁকে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে৷ কয়েকটা জায়গায় সুরকির মতো হয়ে গেছে। ভেতরে ঢুকে কাজ করা যাচ্ছে না৷ তাই পরিস্থিতি বুঝে ভেতরে ঢুকে উদ্ধার অভিযান শুরু করবেন তারা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পূর্ব পাশে দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী গাজী গ্রুপের গাড়ির টায়ার প্রস্তুতকারী গাজী টায়ারস কারখানাটির অবস্থান৷ কারখানাটির মালিক সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী৷ রোববার ভোররাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গোলাম দস্তগীরের গ্রেপ্তারের খবর তার নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকেই সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়৷ দুপুরের দিকে টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানাটির অদূরে একটি মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করা হয়। ঘোষণার পর কয়েকশ মানুষ জড়ো হন কারখানাটির সামনে, শুরু হয় লুটপাট৷ দিনভর লুটপাটের পর রাত ৯টার দিকে কারখানাটির ভেতরের একটি ছয়তলা ভবনে আগুন দেয় লুটপাটকারীদের একটি দল৷ সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও লুটপাট চলে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এদিকে এ ঘটনায় অন্তত ১৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজনরা৷ নিখোঁজদের মধ্যে কয়েকজন নারীর নামও পাওয়া গেছে। তবে, নিখোঁজদের কেউ কারখানাটির কর্মী নন। সবাই আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। ধারণা করা হচ্ছে, লুটপাটের সময় অনেক লোক ভবনটির ভেতরে ছিলেন, কিন্তু আগুন লাগার পর আর বের হতে পারেননি।