গাজার দুই শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ১০০

0
4
গাজার দুই শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলা
মৃত্যুর মিছিল থামছেই না গাজায়। লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি টানলেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে যেন আগ্রাসনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সবশেষ বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার উত্তরাঞ্চলীয় দুই শহর বেইত লাহিয়া এবং জাবালিয়ায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার রাষ্ট্রটি। এই সময়ে এ দুই শহরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০০ জন।
 
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
 
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসালের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, নিহতদের মধ্যে ৭৫ জন বেইত লাহিয়া শহরের এবং বাকি ২৫ জন জাবালিয়া ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার।
 
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ আগস্ট ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার নাম করে ফিলিস্তিনের গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে শত চাপ সৃষ্টির পরও সে আগ্রাসন এখনও থামেনি। মাঝে কিছুদিন আভিযান ও হামলার মাত্রা কিছুটা স্তিমিত হলেও সবশেষ গত ৫ অক্টোবর থেকে উত্তর গাজায় অভিযানে বিশেষভাবে জোর দেয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। তারপর থেকে এ পর্যন্ত উত্তর গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের স্থলবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১০ হাজার।
 
গাজার মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বসবাস করে উত্তরাঞ্চলে। ৫ অক্টোবর বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকে অঞ্চলটিতে খাবার, ওষুধ, জ্বালানি প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে ইতোমধ্যেই মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে উত্তর গাজায়।
 
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন, যারা পানি ও খাবারের সন্ধানে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন। তিনি বলেন, গত প্রায় দুই মাস ধরে উত্তর গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ইতোমধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থতি দেখা দিয়েছে। গণহত্যা, খাদ্যাভাব এবং লাগাতার হামলায় ভয়াবহ পরিস্থিতি পার করছেন উত্তর গাজার বাসিন্দারা।
 
এ হামলার ব্যাপারে এক বিবৃতি দিয়ে আইডিএফ জানিয়েছে, উত্তর গাজায় হামাস সংগঠিত হচ্ছে— এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সবশেষ বিমান হামলাটি চালিয়েছে তারা।
 
এদিকে ২০২৩ সালে ৭ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত অবরুদ্ধ গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৪ হাজার ৪০০ জন সাধারণ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও এক লক্ষাধিক।
 
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
 
তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার আগ পর্যন্ত গাজায় তার বাহিনীর অভিযান চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.