দেশে ৩৪ লাখ শিশু রাস্তায় জীবনযাপন করছে। চরম দারিদ্র্য, পারিবারিক অস্থিরতা এবং শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের কারণে অনেক শিশু পরিবার থেকে আলাদা হয়ে পথে বসবাস শুরু করে। বেঁচে থাকার তাগিদে তারা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়।
‘চাইল্ড সেনসিটিভ সোশ্যাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ (সিএসপিবি) ফেজ-২’ প্রকল্পের অধীনে পথশিশুদের পরিস্থিতি বিষয়ক একটি গবেষণাপত্রে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারিতে এক অনুষ্ঠানে গবেষণাপত্রের তথ্য তুলে ধরা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান হয়েছে। এতে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি।
গবেষণাপত্রে বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে আছে– পারিবারিক ভাঙনের মূল কারণগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। পথশিশুদের শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা। তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা। সরকার থেকে তহবিল বৃদ্ধি করা। পথশিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকার, উন্নয়ন সংস্থা, সুশীল সমাজ, বিত্তশালীদের সম্মিলিতভাবে কাজ করা। একই সঙ্গে শিশু আইনের কয়েকটি ধারার সংশোধন এবং শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয় অনুষ্ঠানে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ ছাড়া বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খায়রুল আলম শেখ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারক, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চাইল্ড প্রটেকশন শাখার প্রধান নাটালি ম্যাক্কলি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি এনরিকো লরেঞ্জোন, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন সিএসপিবি ফেজ-২-এর জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মো. ছরোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানে দীপু মনি বলেন, পথশিশুরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। রাতে তারা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। যেসব শিশু দিনে পথে কাজ করে রাতে পরিবারের কাছে ফিরে যায়, তারাও নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। মৌলিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হবে– এটা কাম্য নয়।
সিমিন হোসেন রিমি বলেন, পথশিশুদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের কাজ করতে হবে। সরকারের নানা কর্মসূচির পাশাপাশি বিত্তশালীরা এগিয়ে এলে পথশিশুর সংখ্যা অনেক কমে আসবে।