শতাব্দীর শুরুর দিকে রিয়াল মাদ্রিদ যেমন তারার হাট বসিয়ে ‘গ্যালাকটিকোস’ বানিয়েছিল, পিএসজিও এখন বোধ হয় সে পথেই হাঁটতে চাইছে। সময়ের অন্যতম সেরা তিন ফুটবলার লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে, নেইমারের সঙ্গে সের্হিও রামোস, জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা, আশরাফ হাকিমি, মার্কিনিওসের মতো তারকারা খেলেন প্যারিসের ক্লাবে।
এক যুগ আগে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট (কিউএসআই) কিনে নেওয়ার পরই পিএসজির এই বদলে যাওয়ার শুরু। ইউরোপীয় ফুটবলে সাফল্য পেতে অঢেল অর্থ ঢেলে চলেছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলে আশীর্বাদপুষ্ট ক্লাবটি। পিএসজির অর্থের দাপট এতটাই বেশি যে খেলোয়াড়দের বেতন দেওয়ায় এখন তাদের ধারেকাছে কেউ নেই! গত মৌসুমে খেলোয়াড়দের ৭২ কোটি ৯০ লাখ ইউরো (প্রায় ৮ হাজার ৫০০ কোটি) পারিশ্রমিক দিয়েছে তারা।
ফরাসি ক্লাবগুলোর আর্থিক লেনদেন তদারকের দায়িত্বে আছে দেশটির সরকারি সংস্থা ডিএনসিজি। সম্প্রতি এ সংস্থাই তথ্যটি দিয়েছে। ডিএনসিজি থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইতালির ক্রীড়া দৈনিক লা গাজেত্তা দেলো স্পোর্ত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরের চেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে খেলোয়াড়দের ১০০ কোটি ইউরো (১ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা) বেশি বেতন দিতে হয়েছে পিএসজিকে। বিষয়টা অবশ্য অনুমেয়ই। কারণ, এ সময়ে মেসি, রামোস, দোনারুম্মা, হাকিমিদের মতো তারকাদের কিনেছে পিএসজি। তাঁরা প্রত্যেকেই উচ্চ বেতনভোগী খেলোয়াড়।
করিম বেনজেমা, থিবো কোর্তোয়া, লুকা মদরিচদের ৫১ কোটি ৯০ লাখ ইউরো (৬ হাজার ৪৯ কোটি টাকা) বেতন দিয়ে তালিকায় দুইয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদ, যা পিএসজির চেয়ে ২১ কোটি ইউরো কম। এর পরেই আছে বার্সেলোনা। স্প্যানিশ ফুটবলে রিয়ালের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবটি লেভানডফস্কি, গাভি, উসমান দেম্বেলেদের গত অর্থবছরে ৪৫ কোটি ৭০ লাখ ইউরো (৫ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা) পারিশ্রমিক দিয়েছে।’
তবে স্প্যানিশ লা লিগার মতো ফরাসি লিগ ‘আ’কর্তৃপক্ষও বেতনসীমা-সংক্রান্ত নীতি চালু করায় স্কোয়াড ছোট করতে শুরু করেছে পিএসজি। এই নীতি জুন থেকে কার্যকর হবে। তার আগেই দি মারিয়াসহ ৮ খেলোয়াড়কে বিক্রি করে দিয়েছে প্যারিসিয়ানরা।
এ মৌসুম শেষে মেসি পিএসজি ছাড়লে ক্লাবটির খরচ অনেকাংশে কমবে। তখন ধারে অন্য ক্লাবে খেলতে যাওয়া ফুটবলাররা ফিরলেও বেতনসীমা-সংক্রান্ত নীতির শর্ত পূরণ করে তাঁদের নিবন্ধন করাতে কোনো সমস্যা হবে না পিএসজির।