বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটনের বিরুদ্ধে ওঠা খেলোয়াড়দের ধর্ষণ ও জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ আমলে নিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তার বিরুদ্ধে মামলা ও শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) কমিশনের উপপরিচালক এম রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ) থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানায়, গত ১০ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘কুংফু-কারাতে শেখানোর বদলে কেড়ে নিতেন মেয়েদের সম্ভ্রম!’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমোটো) গ্রহণ করেছে।
প্রতিবেদন মতে, কুংফু-কারাতে শেখানোর ছলে মেয়েদের সম্ভ্রমহানী করেছেন বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটন। এতে রাজি না হলে মেয়েদের মারধর করে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছেন। এমনকি অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীর গর্ভপাত করানোর মতো ভয়ংকর অভিযোগও পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। এসব অপকর্মের অসংখ্য প্রমাণ, আপত্তিকর ছবি এবং অডিও রেকর্ড পেয়েছে যমুনা টেলিভিশন।
প্রতিবেদন পর্যালোচনায় জানা যায়, অ্যাসোসিয়েশনের অধিকাংশ ট্রেইনি নারী। আর এই নারী খেলোয়াড়দের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতেন নিউটন। এরপর ভালো চাকরি ও বিদেশে খেলতে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং শারীরিক নির্যাতনের মতো অপকর্ম করতেন অভিযুক্ত নিউটন।
এমনকি অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে, স্বর্ণজয়ী ক্রীড়াবিদসহ একাধিক নারী খেলোয়াড়কে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো ঘৃণিত অপরাধে জড়িত তিনি। জুজুৎসুর আরেক নারী খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে নিউটনকে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।
মানবাধিকার কমিশনের সুয়োমোটোতে উল্লেখ রয়েছে, ক্রীড়াসহ সব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীর সম্ভ্রমহানী, ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতনসহ অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীর গর্ভপাত করানোর মতো যে অভিযোগ বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটনের বিরুদ্ধে উঠেছে তা অত্যন্ত ঘৃণিত ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
কমিশন মনে করে, অভিযোগের বিষয়ে সঠিক তদন্তপূর্বক বিভাগীয় শাস্তির পাশাপাশি যথাযথ আইনে মামলা হওয়া আবশ্যক।
কমিশন বলছে, এ অবস্থায়, অভিযোগের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। আগামী ১২ জুন প্রতিবেদনের জন্য ধার্য করা হয়েছে।