খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোট না পাওয়ায় এর মধ্যে তিনজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। ওই তিনজন হলেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান এবং জাকের পার্টির প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন।
সাধারণত কোনো এলাকার ভোটারসংখ্যা অনুযায়ী জামানতের ব্যাপারটি নির্ধারিত হয়। খুলনায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার ভোটারের জন্য মেয়র প্রার্থীদের জামানত দিতে হয়েছিল ৩০ হাজার টাকা করে। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় গত সোমবার। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পযন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে। ভোট গ্রহণ করা হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। ভোট গ্রহণ শেষে রাত ৯টার দিকে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩৬ জন। এর মধ্যে আবার ১ হাজার ৬৫৯ ভোট বাতিল হয়েছে। এতে বৈধ ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৭। ওই হিসাব অনুযায়ী ৪৮ দশমিক ১৬ শতাংশ ভোট পড়েছে এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী মেয়র পদের কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট পেতে হবে। খুলনায় প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা অনুযায়ী সেটি ছিল ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। সেই অনুযায়ী নির্বাচনে ৩২ হাজার ২৪২ ভোটের কম পাওয়ায় তিন মেয়র প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেকের নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট। ওই ভোট পেয়ে তিনি বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবদুল আউয়াল। তিনি পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট। মোট বৈধ ভোটের ৬০ শতাংশ পেয়েছেন তালুকদার আবদুল খালেক। আর ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন মো. আবদুল আউয়াল।
এর বাইরে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলামের লাঙল প্রতীক পেয়েছে ১৮ হাজার ৭৮ ভোট, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেনের গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছে ৬ হাজার ৯৬ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমানের টেবিল ঘড়ি প্রতীক পেয়েছে ১৭ হাজার ২১৮ ভোট। প্রদত্ত ভোট অনুযায়ী শফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৭ শতাংশ, শফিকুর রহমান পেয়েছেন ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও সাব্বির হোসেন পেয়েছেন ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ ভোট। নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোট না পাওয়ায় শফিকুল ইসলাম, শফিকুর রহমান ও সাব্বির হোসেনের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
জানতে চাইলে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পেলে ওই মেয়র প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। সেই অনুযায়ী যাঁরা ভোট পাবেন না তাঁরা জামানত হারাবেন।