খাগড়াছড়িতে পাটাতন দেবে সেতুতেই আটকা কাভার্ড ভ্যান, যান চলাচল ব্যাহত

0
5
পাটাতন দেবে সেতুতেই আটকে রয়েছে কাভার্ড ভ্যান। আজ দুপুরে খাগড়াছড়ির দিঘীনালার বেতছড়ি এলাকায়

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাটাতন দেবে সেতুতেই আটকা পড়েছে মালবাহী কাভার্ড ভ্যান। আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার বেতছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ কারণে সকাল থেকেই খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বেলা তিনটা পর্যন্ত সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাভার্ড ভ্যানটি দিয়ে দীঘিনালা থেকে লংগদুতে যাচ্ছিল। তবে সেতুতেই উঠতে এর পাটাতন দেবে যায়। এরপর এটি উদ্ধার করতে অন্য যান যাওয়ার পর দেবে যায় আরও কয়েকটি পাটাতন। এ কারণে সেতুটি দিয়ে বড় ও মাঝারি আকারের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে।

সেতু দিয়ে যান চলাচলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা। লংগদু সড়কের বাসচালক জসিম উদ্দিন বলেন, বাস নিয়ে খাগড়াছড়ি হয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ায় কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সেতু দেবে যাওয়ায় যেতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে যাত্রীরাও বাড়তি টাকা খরচ করে বিকল্প পথে যাচ্ছেন।

জসিম মিয়ার বাসটিতে থাকা লংগদুর মাইনী এলাকার মো. আবদুর রহিম নামের এক যাত্রী বলেন, বাসে তাঁর ভারী মালপত্র রয়েছে। এ কারণে বিকল্প পথে যেতে পারছেন না। সেতুটি দিয়ে আবার যান চলাচল শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে।

ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও রাঙামাটির লংগদুর বাসিন্দাদের জন্য সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, ঢাকা সহজেই যাতায়াত করা যায়। লংগদু থেকে এ সড়ক দিয়ে সাধারণত আদা, হলুদ, কলা, আনারস, বাঁশ-বেতসহ নানা কৃষিপণ্য দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি আনা হয়। এরপর সেখান থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। কিছুদিন পরপর সেতুর পাটাতন দেবে যাওয়ার কারণে ভোগান্তিতেও পড়তে হয়।

অবশ্য শুধু এ সেতু নয়। এ উপজেলার বাকি সেতুগুলোর অবস্থাও একই। এটি ছাড়াও উপজেলায় আরও পাঁচটি বেইলি সেতু রয়েছে। এগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বোয়ালখালী, মেরুং বাজার, হেডকোয়ার্টার, মাইনী ও জামতলী সেতু নামে পরিচিত। এর মধ্যে মাইনী সেতুর দৈর্ঘ্য ১১০ মিটার। আর বাকিগুলো ১৫ থেকে ৪০ ফুট।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নব্বইয়ের দশকে নির্মাণ হওয়া এসব সেতু নিয়েই এখন ভয় সবার। ভারী যানবাহন চলাচল ও বন্যার কারণে প্রায়ই ব্রিজের পাটাতন খুলে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি স্থবির হয় যোগাযোগব্যবস্থাও। উপজেলায় এসব সেতু দিয়েই রাঙামাটির লংগদু, বাঘাইছড়ি ও সাজেকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়। প্রতিদিন গড়ে ৪০০–৫০০ গাড়ি এই পথে চলে। তবে ছুটির দিনগুলোতে সাজেকগামী গাড়ির চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি পাকা হবে। আমাদের লোকজন ঘটনাস্থলে রয়েছে। সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করার জন্য আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.