ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও খোলা পোশাক কারখানা

0
12
পোশাক কারখানা
জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও কারফিউ, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং প্রধান প্রধান শিল্পাঞ্চলে সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গত তিন মাস ধরে চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে পোশাক শিল্পের উৎপাদন। অর্ডার হারিয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেছেন পোশাক রপ্তানিকারকরা। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে খোলা রয়েছে দেড় শতাধিক পোশাক কারখানা।
 
এ অবস্থায় কারখানা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে শিল্প পুলিশ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জুলাই-আগস্টের অস্থিতিশীল অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আসবে আশা করা হলেও বেশ কিছুদিন ধরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন পোশাক শ্রমিকরা। সম্প্রতি মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেশ কিছু দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে থাকে।
 
ব্যবস্থাপকরা জানিয়েছেন, যথাসময়ে পণ্য রফতানির চাপ বাড়ছে। তাই উৎপাদন বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই ছুটির দিনেও কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। গাজীপুর শিল্পাঞ্চলেও খোলা আছে বেশ কিছু কারখানা। শুধু ছুটির দিন নয়; ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা হয়েছে অনেক পোশাক কারখানা। কারণ বড়দিনকে সামনে রেখের পশ্চিমা অর্ডার ও আসন্ন শরৎ ও শীতের রপ্তানি আদেশ নিশ্চিত করতে চাইছেন রপ্তানিকারকরা।
 
পাশাপাশি দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ধরে রাখতে সাব-কন্ট্রাক্টরদের দিকে ঝুঁকছেন। বিদেশি বিক্রেতাদের কাছে তারা রপ্তানির মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ করছেন।
 
ভারতীয় রেটিং এজেন্সি কেয়ারএজ রেটিংসের মতে, এই সংকট যদি এক থেকে দুই বছরের বেশি অব্যাহত থাকে, তাহলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি আদেশের প্রায় ১০ শতাংশ ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে চলে যেতে পারে।
 
বর্তমানে অনেক রপ্তানিকারক আশঙ্কা করছেন, উৎপাদন বিলম্বের কারণে তাদের বড় ধরনের ছাড় দিতে হবে বা উড়োজাহাজে পণ্য পাঠাতে হবে। এতে পণ্যপরিবহন খরচ অনেক বাড়বে। এমনকি কিছু রপ্তানি আদেশ বাতিলের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
 
এ অবস্থায় তারা বলছেন, বিদেশি খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো যদি শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করে মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দেয়, তাহলে বিরূপ প্রভাব এড়াতে পারবেন তারা।
 
এদিকে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বুধবার জানান, সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পোশাক খাত ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। কারণ অনেক কারখানা পণ্য উৎপাদন করতে ও সময়মতো সরবরাহ করতে পারেনি। এমনকি ক্রেতারা কারখানা পরিদর্শন করতে পারেনি। তবে যেহেতু পোশাক খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে, তাই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য রোববার বা সোমবার বড় খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.