সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে টাকা আয়ের জন্য নিজের শিশু সন্তানের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগে করা মামলায় শারমীন শিলাকে (ক্রিম আপা) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সাভার পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন।
এর আগে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে টাকা আয়ের জন্য নিজের শিশুসন্তানের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগে শারমীন শিলার (ক্রিম আপা) বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।
বুধবার (৯ এপ্রিল) আশুলিয়া থানায় মামলাটি করেন সাভার উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান।
এজাহারে বলা হয়, শারমীন শিলা একজন বিউটিশিয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। তিনি মূলত মেকআপের জন্য বিভিন্ন ক্রিম তৈরি করে তা বিক্রি করেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি তার সন্তানদের নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করেন।
এতে আরও বলা হয়, ৩ মার্চ বিকেল ৪টায় তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, শারমীন শিলা তার মেয়ে জিমকে (বয়স ২ বছর) জোর করে মুখ হা করিয়ে কেক জাতীয় খাবার দিচ্ছেন। মেয়ে খেতে চাচ্ছিল না, এজন্য তিনি জোর করে মুখে চাপ দিয়ে খাবার দিতে থাকেন। আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলা ও মাতৃসুলভ আচরণ বর্জন করে শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছেন ক্রিম আপা। ফলে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভিউ বাড়ানো ও টাকা আয়ের জন্য তিনি তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। কখনো মাথা ন্যাড়া করে, আবার কখনো ভারী কানের দুল লাগিয়ে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে দেন।
এর বাইরে কী রান্না করছেন, কী খাচ্ছেন- এসব নিয়ে করা বিভিন্ন ভিডিওতে মেয়েকে হাজির করেন ‘ক্রিম আপা’। তখন মেয়ে ভয়ে চুপ করে থাকে। কখনো হাসে আবার কখনো অস্বাভাবিকভাবে কাঁদে। মেয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকে তা বিভিন্ন ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা যায়।
সাভারের বাইপাইলে ‘ক্রিম আপা বিউটি পার্লার’ নামে শারমীন শিলার একটি পার্লার আছে। এছাড়া তিনি ফেসবুকে রং ফরসার ক্রিম বিক্রি করেন।
এ নিয়ে ৬ এপ্রিল ‘একাই একশো’ নামের শিশুদের সুরক্ষায় সামাজিক আন্দোলনের পক্ষে কিশোর সাদাত রহমানসহ অন্যরা ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তিনদিনের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।