দেশে জন্ম নেওয়া নবজাতকদের মধ্যে ৭.২ শতাংশই নানা শারীরিক ত্রুটি নিয়ে ভূমিষ্ট হচ্ছে। এই সংখ্যা বিশ্বের গড় হারের দ্বিগুনেরও বেশি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবজাতক বিভাগের করা এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।
এ হাসপাতালে ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে আসা ১১ হাজার ২৩২ জনের ওপর করা জরিপে এ তথ্য পাওয়া যায়। এ সময় নবজাতক বিভাগে নানা শারীরিক ক্রটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে ৭৮৯টি শিশু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে বিশ্ব জন্মগত ক্রটি দিবস উপলক্ষে আজ রোববার দুপুরে আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
চিকিৎসকগণ বলছেন, জন্মগত ক্রটি চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ সহজ। গর্ভ পূর্ববর্তী এবং গর্ভকালীন সময়ে চেকআপ করা, গর্ভকালীন সময়ে (১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে) আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে জন্মগত ক্রটি নির্ধারণ করা, গর্ভকালীন অসংক্রামক ব্যাধি যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, অল্প এবং অধিক বয়সে গর্ভনিরোধ, আয়োডিনযুক্ত লবণের মতো খাবারের সঙ্গে ফলিক এসিড মেশানোর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের জন্মগত ক্রটি প্রতিরোধ সম্ভব।
বিএসএমএমইউর নবজাতক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কুমার দের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী জন্মগত ক্রটির হার প্রতি ১০০ জনে ৩ জন। বিশ্বে প্রতি ৩৩ জন শিশুর মধ্যে ১ জন জন্মগত ক্রটি নিয়ে জন্মায়। সারা বিশ্বে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জন্মগত ক্রটির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। প্রতি বছর শুধুমাত্র জন্মগত ক্রটির জন্য জন্মের ২৮ দিনের মধ্যে প্রায় ৩ লক্ষ শিশু মারা যায়। শিশু মৃত্যুর এই প্রভাব টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নবজাতকদের জন্মগ্রত ত্রুটি প্রতিরোধ এবং এর চিকিৎসার উপর জোর দিচ্ছে। এ ছাড়া উন্নততর চিকিৎসা সেবা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে নিত্যনতুন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে।