ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে কোমরে পিস্তল গুঁজে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। কথা বলার জন্য রোববার দুপুরে পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম শুভ্রদেব সিং ওরফে সুদেব সিং। তিনি বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
শুভ্রদেব সিংয়ের মা মাধবী বিশ্বাস জানান, কথা বলার জন্য পুলিশ শুভ্রদেবকে থানায় নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘সে ছেলে মানুষ, বুঝতে পারেনি। শখের বসে মেলা থেকে খেলনা পিস্তল কিনে ছবি তুলেছে।’
ছবিতে শুভ্রর গায়ে যে শার্ট দেখা গেছে সেটি তার নয় জানিয়ে মাধবী বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা ওইসব কোথায় পাব? ওসি কথা বলবেন বলে দুপুরে বাড়ি থেকে শুভ্রকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।’
শুভ্রদেবকে আটকের বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুল ওহাব বলেন, ফেসবুকে বিষয়টি নজরে এলে আমরা শুভ্রদেবকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।
স্থানীয়রা জানান, শুভ্রদেব সিং ওরফে সুদেব সিং কোমরে পিস্তল গুঁজে শনিবার সকালে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে নিচে ক্যাপশনে লিখেন, ‘দিবেন যা, পাবেন তা, ভাবনা চিন্তা কল্পনাহীন’। ফেসবুকে ছবি ছাড়ার পরই বিষয়টি নিয়ে এলাকায় হৈচৈ শুরু হয়। এরপর ফেসবুক থেকে সেটি সরিয়ে নেন তিনি।
এ বিষয়ে শুভ্রদেব সিং বলেন, ‘উপজেলার কাটাগড় মেলা থেকে ভাইয়ের ছেলের জন্য একটি খেলনা পিস্তল কিনেছি। শখের বসে সেই পিস্তল কোমরে গুঁজে ছবি তুলে পোস্ট করি। এরপর বিভিন্ন জন নানারকম মন্তব্য করায় ছবিটি তুলে নিয়েছি।’ ‘এটি ভুল হয়েছে, এভাবে ছবি তুলে দেওয়া ঠিক হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন শুভ্রদেব।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন, ‘শুভ্রদেব সিং মেলা থেকে খেলনা পিস্তল কিনে শখের বসে ছবি আপলোড করেছিল। একটি বিরোধী চক্র ওই ছবি নিয়ে চক্রান্ত শুরু করে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে বলে শুনেছি।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোরতুজা আলী তমাল বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। শুনেছি সে মেলা থেকে একটি খেলনা পিস্তল কিনে কোমরে গুঁজে ছবি দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম ছবি ছাড়া ঠিক হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। যদি সংগঠন পরিপন্থী কোন কাজ হয় তাহলে অবশ্যই তার (শুভ্রদেব) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ‘ তিনি বলেন, থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে বলে শুনেছি তবে নিশ্চিত নই।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল মনে করেন পিস্তলটি আসল হতে পারে। তিনি জানান, এর আগে উপজেলায় হাটবাজার টেন্ডারের দিনে একজন চেয়ারম্যানের চালকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়েছিলেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। এমনকি ৬ মাস আগে তার (পিকুল মীরদাহর) বাইক চালকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমানকে জানিয়েছিলেন।