কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে রাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

0
40
অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ (রাবি) রাজশাহীর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ (রাবি) রাজশাহীর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
 
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
 
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা, ‘আমি নই, রাজাকার’, ‘তুমি নও, রাজাকার’, ‘তারা নয়, রাজাকার’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘আমি কে, তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘এক দুই তিন চার, মেধাবীরা রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে, সরকার সরকার’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধাসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
 
কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ তপু বলেন, ‘গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী একটা বক্তব্য রেখেছেন। সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আসলে ক্ষুব্ধ । যদিও আজ আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আজকের এই অবস্থান কর্মসূচি মূলত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রতিবাদে। প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল এবং ভরসার জায়গা। তার এমন বক্তব্য সাধারণ ছাত্র সমাজকে হতাশ করেছে। তার প্রেক্ষিতেই আজকের এই কর্মসূচি।’
 
কর্মসূচিতে রাজাকার স্লোগান দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আম্মার নামের আরেক শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বলেন, ‘যেখানে ১৯৭১ সালের পর থেকে রাজাকার একটি গালি হিসেবে বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি আমাদের রাজাকারের সন্তান এবং রাজাকারের নাতি বলে সম্বোধন করেছেন। কিন্তু তিনিও রাজাকার না, আমরাও রাজাকার না। আমরা সংবিধান স্বীকৃত বাঙালি।’
 
‘প্রধানমন্ত্রী এত বড় একটি জায়গায় থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন বক্তব্য দিতে পারেন না। আমরা ছাত্রসমাজ ’৫২ তে আন্দোলন করেছিলাম, এখনও আন্দোলন করব। আমরা যেকোনো সময় আন্দোলন করার অধিকার রাখি। কিন্তু তাই বলে আমাদের রাজাকারের সন্তান বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে এবং আন্দোলনে হামলা করা হবে, এটাতো আমরা মেনে নিতে পারব না।’
 
এর আগে, সোমবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও আশপাশে ছাত্রাবাস থেকে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সমবেত হয় রাবি শিক্ষার্থীরা। এ সময় রুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থী একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন।
 
অবস্থান কর্মসূচিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী অংশ নেন। পরে দুপুর ২টায় অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে রাবি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
 
প্রসঙ্গত, রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে।’
 
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জের ধরে রোববার রাতেই আন্দোলন শুরু করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.