
অনূর্ধ্ব-১৬ নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে দুবার খেলেছে বাংলাদেশ। এ বছর প্রথমবার জাতীয় ও অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠেছে। বড়দের পথ ধরে বছরটা রাঙাতে পারবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল? বাছাইপর্ব খেলে এশিয়ান অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবলের কাপের চূড়ান্ত পর্বে ওঠার সুযোগ তাদের সামনেও।
তবে বাছাইপর্ব খেলে চূড়ান্ত পর্বে ওঠা বাংলাদেশের কিশোরীদের জন্য কঠিনই। এ ক্ষেত্রে অবশ্য বড়দের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে ছোটরা। এ জন্য ১৩ অক্টোবর জর্ডানে শুরু হতে যাওয়া এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম দিনে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক জর্ডান। ১৭ অক্টোবর দ্বিতীয় ম্যাচ চায়নিজ তাইপের সঙ্গে। তিন দলের গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন দল জায়গা পাবে আগামী বছর চীনে অনুষ্ঠেয় মূল পর্বে।
জর্ডান ও চায়নিজ তাইপে অনেক শক্তিশালী দল। সেখানে আমরা ভালো কিছু করব ওই পর্যায়ে থেকে, তেমন প্রত্যাশা থাকবে না। এটাকে ওরা শেখার টুর্নামেন্ট হিসেবে নিয়ে নিজেদের তৈরি করবে।
মাহফুজা আক্তার , বাফুফের নারী কমিটির প্রধান
জর্ডানে যাওয়ার আগে দুবাইয়ে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দল। ৭ অক্টোবর প্রতিপক্ষ সিরিয়া, ৯ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুবাই থেকে দল যাবে জর্ডানে। বাংলাদেশ দল আগামীকাল রোববার দুবাই রওনা হচ্ছে।

বয়সভিত্তিক ফুটবলে সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকলেও বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার এই সফরকে ‘শিক্ষা সফর’ আখ্যা দিয়েছেন, যা একটু অবাক করারই। বাংলাদেশের মেয়েরা এখন কোনো টুর্নামেন্টে গেলে সেটিকে শিক্ষা সফর হিসেবে সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা একটু ব্যতিক্রমই। মাহফুজা আগেই আত্মসমর্পণ করলেন কেন, সেটাও একটা প্রশ্ন।
এর ব্যাখ্যায় মেয়েদের এই দলের প্রস্তুতিঘাটতি, কোচ বদল, কোচের সময় না পাওয়া ইত্যাদি কারণ সামনে এনেছেন মাহফুজা। আজ বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জর্ডান ও চায়নিজ তাইপে অনেক শক্তিশালী দল। সেখানে আমরা ভালো কিছু করব ওই পর্যায়ে থেকে, তেমন প্রত্যাশা থাকবে না। এটাকে ওরা শেখার টুর্নামেন্ট হিসেবে নিয়ে নিজেদের তৈরি করবে। আমাদের মেয়েদের খুব ভালো প্র্যাকটিস হয়েছে, বলব না। বিভিন্ন কারণে সেটা হয়নি। সেখানে আমাদের লক্ষ্য থাকবে—মেয়েরা ভালো খেলবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সবচেয়ে বড় কথা, এটা হবে ওদের শেখার টুর্নামেন্ট।’
কিছুদিন আগে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ খেলেছি। এখন লক্ষ্য এএফসি বাছাই পেরিয়ে চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া।
বাংলাদেশ দলের কোচ ও অধিনায়ক অবশ্য মনে যা–ই থাকুক, আশার কথাই বলেছেন। কোচ সাইফুল বারীর কথায়, ‘বেশি দিন হয়নি আমি দায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের আসল প্রস্তুতিটা দুবাইয়ে হবে। জর্ডানে দুই প্রতিপক্ষ বেশ এগিয়ে। তবে আমরা যাচ্ছি কোয়ালিফাই করার জন্যই।’

অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার অর্পিতা বিশ্বাসের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস, ‘প্রস্তুতি মোটামুটি ভালো হয়েছে। কিছুদিন আগে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ খেলেছি। এখন লক্ষ্য এএফসি বাছাই পেরিয়ে চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া। দুবাইয়ে দুই ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখব, ভুল হলে সংশোধন করব।’
এই সফরে সহকারী কোচ করা হয়েছে ফিফা রেফারি জয়া চাকমাকে। কিন্তু একজন সক্রিয় রেফারি সহকারী কোচ কেন? সাইফুল বারীর ব্যাখ্যা, ‘এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। জয়া ‘‘এ’’ লাইসেন্সধারী কোচ, অনেক বছর ধরে বিকেএসপির ফুটবল কোচ ছিল। খেলোয়াড়দের কাছে জনপ্রিয়ও। মেয়েদের কোচ মেয়েদেরই হওয়া উচিত। আমাদের ধীরে ধীরে সেদিকেই যেতে হবে।’