বিদেশি কূটনীতিকদের আনসার বাহিনী কীভাবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা (এসকর্ট) দেবে, সেটি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বা রোববারের মধ্যে নোট ভার্বালের (কূটনৈতিক পত্র) মাধ্যমে দূতাবাসগুলোকে বিষয়টি জানানো হবে বলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন পররাষ্ট্রসচিব।
একই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘কূটনীতিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে আনসার বাহিনী প্রস্তুত আছে, আর্থিক বিষয় আলোচনা করে ঠিক করা হবে।’ চার দেশের রাষ্ট্রদূতদের দেওয়া ‘বাড়তি নিরাপত্তা’ প্রত্যাহারের ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যে আজ এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গত সোমবার থেকে অনেকটা আকস্মিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ভারত—এই চার দেশের রাষ্ট্রদূতদের দেওয়া বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা (এসকর্ট) সরকার প্রত্যাহার করে নেয়। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। ওই দিনই একাধিক দূতাবাস এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের হতাশার কথা অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারকে জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তাসুবিধা না দেওয়ার কারণ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‘আমরা তাঁদের বলেছি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের নানা কৃচ্ছ্রসাধন করতে হচ্ছে। তাই রাষ্ট্রদূতদের যে বাড়তি নিরাপত্তাসুবিধা দেওয়া হয়, সেটি আর অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’
কূটনৈতিক আরও সূত্র বলছে, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়, রাষ্ট্রদূতদের নিয়মিত যে নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তা অটুট থাকবে। বাড়তি নিরাপত্তাসুবিধা হিসেবে যানজট এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত যে পুলিশ তাদের দেওয়া হয়েছিল, তা আর দেওয়া হবে না। কারণ, যে ধরনের পরিস্থিতির কারণে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছিল, সেটার যথেষ্ট উন্নতি রয়েছে। এ ছাড়া সরকারের পুলিশি জনবলেরও সংকট রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিদেশি কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ২০১৬ সালে ভয়াবহ ওই জঙ্গি হামলার পর মৌখিক নির্দেশে হয়েছিল। ওই সময়ে এ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং এখনো আছেন, এমন একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সময় এই সিদ্ধান্তগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা হয়েছিল। এ ছাড়া ২০০৪ সালের মে মাসে তখনকার যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে গ্রেনেড হামলার পর থেকে তাঁকে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের অন্য হাইকমিশনাররাও এই নিরাপত্তাসুবিধা পেয়ে আসছিলেন।