৫৭ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আছেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

0
102
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দহর গ্রামে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের ৫৭টি জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী আছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় রোগী সবচেয়ে বেশি। যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, তার ৬০ ভাগই ঢাকায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেক রোগী আছেন। আজ রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দহর গ্রামে নিজ বাসভবনে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে। এ বছর ডেঙ্গুতে ইতিমধ্যে দেশে প্রায় ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ১২ হাজার লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত প্রায় আড়াই হাজার লোক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার যে প্রটোকল আছে, যে নিয়মনীতি আছে, তা বিভিন্নভাবে উন্নত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এ বছর ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেশি। এর কারণ হলো, মশা বেড়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পানি বিভিন্ন স্থানে আটকে আছে, যেখানে মশা জন্ম নিচ্ছে, লার্ভা হচ্ছে। এটা কমানোর একমাত্র উপায়ই হলো মশা কমানো। মশা কম হলে কামড়াবে কম। এতে মানুষ ডেঙ্গুতে কম আক্রান্ত হবে।

সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে মশা নিধনে বেশি বেশি স্প্রে করার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডেঙ্গু মোকাবিলা করে চলছি। যেখানে পানি জমে থাকে, সেই পানি সরিয়ে ফেলতে হবে। বিশেষ করে বাড়িঘরের আঙিনায় জমে থাকা পানি। আরেকটি দিক হলো, যেখানে বহুতল ভবন আছে, সেই ভবনেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা দিচ্ছে। যেসব নির্মাণাধীন ভবন আছে, সেখানে পানি জমে থাকে। সেখান থেকেই ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা ও লার্ভা জন্ম নিচ্ছে।’

ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু সরকার ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে পারবে না। সবাইকে যাঁর যাঁর আঙিনা পরিষ্কার করতে হবে। যেখানে এডিস মশা ও লার্ভা তৈরি হচ্ছে, সেখানে বেশি বেশি স্প্রে করতে হবে। লার্ভাগুলো ধ্বংস করতে হবে।

গত বছর এ সময় ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেক ভালো ছিল উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, এ বছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। সামনের দুই থেকে তিন মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বেশি বাড়তে পারে। কারণ, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। ইতিমধ্যে ডেঙ্গু অনেক বেড়েছে। সজাগ না হলে আরও বেড়ে যাবে। সবাই মিলে কাজ করতে পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই না, একটি লোকও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করুক। যাঁরা একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে তাঁদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। কাজেই এদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। দেশের সব হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিট করা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া আছে। স্যালাইনসহ যেসব ওষুধ প্রয়োজন, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসায় কোনো সমস্যা নেই।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.