পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির এক বিষধর সামুদ্রিক মাছ ‘লায়নফিশ’। মাছটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ‘বাঘা মাছ’ নামেও পরিচিত। কেউ কেউ এটিকে ‘রাওয়া মাছ’ নামেও চেনেন। রঙিন দাগ ও লম্বা কাঁটাযুক্ত পাখনাবিশিষ্ট এই মাছ দেখে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
আজ সোমবার সকালে মহিপুর মৎস্য বন্দরের মেসার্স মুন্নী ফিশ নামের মাছের আড়তে বিরল প্রজাতির এই মাছ আনা হলে মৎস্য বন্দরজুড়ে হইচই পড়ে যায়। অনেকেই মাছটি দেখতে ভিড় জমান এবং অনেকে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন।
স্থানীয় জেলে আবদুল মন্নান মাঝি বলেন, গত পরশু কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জাল ফেললে অন্যান্য মাছের সঙ্গে এই অদ্ভুত মাছটিও ধরা পড়ে। দেখতে অনেক সুন্দর হলেও শুনেছেন এটি বিষধর।
মুন্নী ফিসের ব্যবস্থাপক হিরন মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, এটি সাধারণ কোনো মাছ, কিন্তু পরে দেখি, রংটা অনেক অদ্ভুত আর পাখনাগুলো কাঁটার মতো। তারপরই বুঝতে পারি, এটি বিরল কিছু।’
মাছটির দেহে লাল, সাদা ও বাদামি রঙের ডোরাকাটা দাগ এবং লম্বা কাঁটাযুক্ত পাখনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি লায়নফিশ, যা সাধারণত ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের উষ্ণ পানিতে পাওয়া যায়।
সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ-প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান বলেন, লায়নফিশ দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হলেও এটি অত্যন্ত বিষধর মাছ। এর পাখনার কাঁটায় থাকা বিষ মানুষকে দংশন করলে তীব্র ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তাই খালি হাতে এই মাছ ধরা ঝুঁকিপূর্ণ।
মো. বখতিয়ার আরও বলেন, লায়নফিশ মূলত ছোট মাছ ও চিংড়ি খেয়ে বেঁচে থাকে। এটি সাধারণত ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও লোহিত সাগরের উষ্ণ উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা যায়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘এ রকম মাছ এর আগে আমিও দেখিনি। এ মাছ খালি হাতে ধরা ঝুঁকিপূর্ণ।’

















