পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে বান্দরবান জেলা পরিষদের উদ্যোগে গঠিত শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির দ্বিতীয় ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। বান্দরবান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে তিন ঘণ্টা আলোচনা চলে। আলোচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি না হলেও উভয় পক্ষ আলোচনা চলমান রাখার ব্যাপারে সম্মত বলে জানিয়েছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা।
তিনি জানান, কেএনএফকে তাদের দাবি লিখিত আকারে পাঠাতে ও মুখোমুখি সংলাপে বসার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু উভয় আহ্বানেই কেএনএফের পক্ষ থেকে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি। তবে মুখোমুখি আলোচনার ব্যাপারে শিগগির জানানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কেএনএফ নেতারা।
আলোচনায় কেএনএফ নেতা ময়য়া ওরফে লালসাংলম বমের নেতৃত্বে যুক্ত ছিলেন সংগঠনের তিন নেতা ভাপুয়াল বম, স্টে ওয়াড ও লিয়ানা ওরফে জেরমিংলিয়ান বম। শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন মুখপাত্র ও বান্দরবান পাবর্ত্য জেলা পরিষদ সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা। আরও উপস্থিত ছিলেন বম সোশ্যাল কাউন্সিল সভাপতি লালজারলম বম, সাধারণ সম্পাদক লালথাংজেম বম, খ্রিষ্টান ধর্মীয় গুরু ও বম সোশ্যাল কাউন্সিলের উপদেষ্টা রেভারেন্ট পাকসিম বয়তলুংসহ কমিটির ১০ জন সদস্য এবং সাংবাদিকরা। আলোচনায় কেএনএফ নেতারা ভারতের মিজোরাম, মিয়ানমার, নাকি দেশের অভ্যন্তরে থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়েছেন, তা জানা যায়নি। তবে তাদের চার নেতা চার জায়গা থেকে আলাদাভাবে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। ছিলেন না কেএনএফের প্রধান নেতা নাথান বম।
বৈঠকে উপস্থিত শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, আলোচনাকালে কোনো ধরনের সংঘাত-সহিংসতায় না জড়াতে আবারও অনুরোধ জানানো হয়েছে কেএনএফকে।
এর আগে গত ১৯ জুলাই শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় কেএনএফ তাদের প্রথম ও প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনসহ ৭টি দাবি রেখেছিল। শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষ থেকে কেএনএফকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, একটি স্বাধীন দেশে তারা যেন এ অবান্তর দাবি থেকে সরে এসে আলোচনার টেবিলে বসে। তবে তাদের প্রধান দাবি ছাড়া অন্যান্য দাবি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।