কীভাবে বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভাঙতে সক্ষম হচ্ছে

আল–জাজিরার এক্সপ্লেইনার ইরান

0
13
ইসরায়েলের আশকেলন শহরের আকাশে ইরান থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর চেষ্টা করছে তেল আবিবের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, ছবি: রয়টার্স

ইরানে গত শুক্রবার ইসরায়েলের বিমান হামলার পর পাল্টা জবাবে তেহরান দেশটিতে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছে। এর মধ্যে কিছু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় ইরানে এ পর্যন্ত ৭০ নারী–শিশুসহ ২৪০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এর জবাবে ইরান প্রায় ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ও কয়েক শ ড্রোন নিক্ষেপ করে। এতে ইসরায়েলে অন্তত ২৪ জন নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হন। দেশজুড়ে ইসরায়েলিরা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হন।

ইরানের কিছু হামলা ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের আবাসিক এলাকায় আঘাত হেনেছে, যাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি তেল আবিবে অবস্থিত সুরক্ষিত ইসরায়েলি সামরিক সদর দপ্তর কিরিয়াতেও হামলার ঘটনা ঘটে। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল সীমিত।

গতকাল মঙ্গলবার ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা কেন্দ্র ও বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি পরিকল্পনা কেন্দ্রে আঘাত করেছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের সবচেয়ে উন্নত ও বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে তারা।

গতকাল মঙ্গলবার ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা কেন্দ্র ও বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি পরিকল্পনা কেন্দ্রে আঘাত করেছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের সবচেয়ে উন্নত ও বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে তারা।

সাম্প্রতিককালের ইতিহাস বলছে, ইসরায়েল আয়রন ডোমের মতো তার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে দেশটিতে বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সফলভাবে প্রতিহত করেছে।

তাহলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র কীভাবে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেদ করছে, জানা যাক সেই প্রশ্নের উত্তর।

ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘আয়রন ডোম’। তবে এটি একটি বৃহত্তর বহুস্তর ও সমন্বিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নিচের স্তরমাত্র।

অ্যালেক্স গ্যাটোপুলোস, আল–জাজিরার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক

আয়রন ডোম কী

ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘আয়রন ডোম’। তবে এটি একটি বৃহত্তর বহুস্তর ও সমন্বিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নিচের স্তরমাত্র বলে জানিয়েছেন আল–জাজিরার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অ্যালেক্স গ্যাটোপুলোস।

আয়রন ডোম ধেয়ে আসা কোনো রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রকে শনাক্ত, এর গতিপথ নির্ধারণ ও ধ্বংস করে। ইসরায়েলের দাবি, এ ব্যবস্থা ৯০ শতাংশ সফল। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে মূলত ২০০৬ সালে সংঘটিত যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইসরায়েল ২০১১ সালে এ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। তখন হিজবুল্লাহর রকেট হামলা প্রতিহত করতেই আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।

গ্যাটোপুলোস জানান, আয়রন ডোম নিচু উচ্চতার রকেট থামানোর জন্য তৈরি, যেগুলো বৃহত্তর প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় ধরা পড়ে না।

ইসরায়েলের রেহোভত এলাকায় ইরানের হামলায় বিধ্বস্ত ভবন
ইসরায়েলের রেহোভত এলাকায় ইরানের হামলায় বিধ্বস্ত ভবন,ছবি: রয়টার্স

এ ছাড়া ইসরায়েলের রয়েছে বারাক-৮, ডেভিড’স স্লিং ও টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ব্যবস্থা, যেগুলো বিভিন্ন পাল্লার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম। ‘ভূমি থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বারাক-৮ মধ্যমপাল্লার এবং থাড স্বল্প, মধ্যম ও দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করে থাকে। আর মধ্যম থেকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিরোধ করতে পারে ডেভিড’স স্লিং।

আয়রন ডোম ধেয়ে আসা কোনো রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রকে শনাক্ত, এর গতিপথ নির্ধারণ ও ধ্বংস করে। ইসরায়েলের দাবি, এ ব্যবস্থা ৯০ শতাংশ সফল। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে মূলত ২০০৬ সালে সংঘটিত যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইসরায়েল ২০১১ সালে এ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। তখন হিজবুল্লাহর রকেট হামলা প্রতিহত করতেই আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা

দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ইসরায়েল ব্যবহার করে অ্যারো-২ ও অ্যারো-৩ ব্যবস্থা, যেমনটা বর্তমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ব্যবহার করছে তেল আবিব। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধব্যবস্থা তৈরি করেছে ইসরায়েলের রাষ্ট্রায়ত্ত ‘ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ’, যার সঙ্গে যুক্ত আছে মার্কিন সংস্থা বোয়িং।

অ্যারো-২ ব্যবস্থাটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভেতর ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রে খানিকটা উচ্চতার ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে সক্ষম।

এ ছাড়া ‘আকাশ থেকে আকাশ’ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে থাকে ইসরায়েল। এ ব্যবস্থায় ধেয়ে আসা ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে আকাশ থেকে ধ্বংস করে তারা।

ইন্টারসেপ্টর (আক্রমণ প্রতিহতকারী ক্ষেপণাস্ত্র) যদি কমে যায়, তাহলে আর বেশিসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করা যায় না। এ ছাড়া কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাই শতভাগ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে পারে না।

মেরিনা মিরন, লন্ডনের কিংস কলেজের পোস্টডক্টরাল গবেষক

আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে

ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মূলত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত: রাডার ব্যবস্থা, কমান্ড সেন্টার ও প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র–সংবলিত লঞ্চার।

লন্ডনের কিংস কলেজের পোস্টডক্টরাল গবেষক মেরিনা মিরন আল–জাজিরাকে বলেন, শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র আসতে থাকলে প্রথমে রাডার সেটি শনাক্ত করে, পরে কমান্ড সেন্টারে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। এ সেন্টার মূল্যায়ন করে, কোন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হবে। এরপর লঞ্চার সাধারণত ধেয়ে আসা কোনো ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে দুটি প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।

তবে সব প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মতো ইসরায়েলের এ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাতেও সীমিতসংখ্যক প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র আছে। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় ঠিক কতটি প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র আছে, সেটি অজানা রয়ে গেছে।

ইসরায়েলের আয়রন ডোম আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা
ইসরায়েলের আয়রন ডোম আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইরান কি সত্যিই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ভেদ করতে পেরেছে

গত শনিবার ইসরায়েলি এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সফল। তবে শতভাগ সাফল্য কোনো ব্যবস্থাতেই নেই। এর মানে কিছু ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে।

তাহলে কীভাবে সফল হলো ইরান? এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিতভাবে না জানলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি সম্ভাব্য উপায়ে ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ভেদ করেছে।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ কৌশল হলো, অতিরিক্ত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র শেষ করে ফেলা।

মিরন বলেন, ‘ইন্টারসেপ্টর (আক্রমণ প্রতিহতকারী ক্ষেপণাস্ত্র) যদি কমে যায়, তাহলে আর বেশিসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করা যায় না।’ এ ছাড়া কোনো ব্যবস্থাই শতভাগ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র

আল–জাজিরার বিশ্লেষক গ্যাটোপুলোস বলেন, ইরানের হাতে এখন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা ক্রমাগত উন্নত ও পরিণত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থারই প্রত্যক্ষ ফলাফল। কারণ, কোনো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফাঁকি দেওয়ার একটি উপায় হলো, এমন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা, যা অতি দ্রুতগতিতে উড়ে আসে। ফলে প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সাড়া দেওয়ার জন্য সময় অনেক কম থাকে।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাডারে ধরা পড়লেও প্রতিহত করা কঠিন বলে জানান মিরন।

কিছু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকল (এইচজিভি) সংযুক্ত থাকে। এটি একটি যুদ্ধাস্ত্র, যা শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ দ্রুতগতিতে উড়তে ও দিক পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়। ইরানের ‘ফাত্তাহ-২’ ক্ষেপণাস্ত্রে এইচজিভি ব্যবহৃত হয়েছে। গ্যাটোপুলোস বলেন, ‘(হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র) দেখতে একটি সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্রের মতো, যার শেষ প্রান্তে একটি উড়ন্ত যান যুক্ত থাকে।’

‘প্যালেস্টাইন-২’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা একটি অজানা স্থানে ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওটি ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ প্রকাশ করে ইয়েমেনের হুতি সামরিক গণমাধ্যম
‘প্যালেস্টাইন-২’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা একটি অজানা স্থানে ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওটি ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ প্রকাশ করে ইয়েমেনের হুতি সামরিক গণমাধ্যমছবি: হুতি সামরিক গণমাধ্যম/রয়টার্স

এই প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্যাখ্যা করে বলেন, শুধু যে এইচজিভি দ্রুতগতিতে চলে তা নয়, এগুলো পথের মধ্যে আচমকা দিক বদল করে, এঁকেবেঁকে এগোয় এবং সাধারণ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো পূর্বানুমানযোগ্য পথে চলে না। এমন দ্রুত ও অনিয়মিত ধাঁচে চলাচলের ফলে এগুলো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এড়াতে সক্ষম হয়। কারণ, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মূলত ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ অনুমান করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

‘ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও গতিপথ বদল করতে পারে এবং এগুলো প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে’, বলেন মিরন।

ইরানের অস্ত্রভান্ডারে আছে হোভেইজেহসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলায় এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করেছে দেশটি। এগুলো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় কম উচ্চতায়, ধীরগতিতে উড়ে যায়; অনেকটা চালকবিহীন বিমানের মতো। এ কারণে এগুলো রাডারে ধরা কঠিন হয়।

আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কীভাবে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে

কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক মারিনা মিরন জানান, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দেওয়ার আরেক কৌশল—দেখতে ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্রের মতো বস্তু পাঠিয়ে বা টোপ ফেলে প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভারাক্রান্ত করা এবং এর মধ্য দিয়ে প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলা।

মিরন বলেন, ‘রাডারে এসব বস্তু হুমকি হিসেবে ধরা পড়ে, কিন্তু বাস্তবে এগুলো হামলার জন্য পাঠানো নয়। সাধারণত এ ধরনের বস্তু ব্যবহার করা হয় প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ খালি করার জন্য, যাতে পরে আসল ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনগুলো বাধাহীনভাবে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে পারে।’

মিরন আরও বলেন, কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আবার রাডার ফাঁকি দেওয়ার প্রযুক্তিতে সজ্জিত। ফলে এগুলো প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নজর এড়িয়ে যেতে পারে।

ইরান বা ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র কি ফুরিয়ে যেতে পারে

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক গ্যাটোপুলোস বলেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত এখন মূলত ধ্বংস বা শক্তিক্ষয়ের এক লড়াই হয়ে উঠেছে।

গত সোমবার ইসরায়েল দাবি করে, তারা ইরানের আকাশসীমার ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে গ্যাটোপুলোস জানান, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সর্বনিম্ন দূরত্ব ১ হাজার কিলোমিটার (৬২০ মাইল)। তিনি বলেন, ‘এই দূরত্ব ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের জন্য অনেক বড়, বিশেষ করে যদি জ্বালানি ছাড়াই যেতে হয়।’

এই বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘তারা (ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান) শত্রুপক্ষের আকাশসীমায় ঢুকতে পারে, কিন্তু সেটা সীমিত সময়ের জন্য।’ তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে আকাশপথে জ্বালানি সরবরাহ করে সহায়তা করতে পারে বটে, তবে যুদ্ধবিমানে অতিরিক্ত ট্যাংক যুক্ত করলে সেটির গোপনীয়তা বা স্টিলথ ক্ষমতা হ্রাস পায়।

‘এতে প্রশ্ন ওঠে, এই টানা সংঘাতে ইরানের হাতে আসলে কত ক্ষেপণাস্ত্র আছে, যার সাহায্যে তারা লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে। আর ইসরায়েলের হাতেই-বা কত ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র (বিশেষ করে অ্যারো-২ ও অ্যারো-৩) আছে, যেগুলো তারাও টানা ব্যবহার করতে পারবে,’ বলেন গ্যাটোপুলোস।

আল জাজিরা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.