টাঙ্গাইলের সখীপুরের জামালের চালা এলাকায় আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার রাতে র্যাবের সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব ১৪-এর যৌথ দল রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও টাঙ্গাইলের সখীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। র্যাব বলছে, স্থানীয় সমিতি থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির টাকা জোগাড়ের জন্য ওই দু’জনকে হত্যা করে আসামিরা।
গ্রেপ্তার দু’জন হলেন– হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মোস্তফা মিয়া ও তার সহযোগী মো. আলামিন।
এ বিষয়ে জানাতে শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, হত্যার শিকার মো. শাহজালাল সখীপুরের হামিদপুর বাজারে মুদি দোকান চালাতেন। পাশাপাশি তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট ছিলেন। একই ঘটনায় খুন হওয়া তাঁর চাচা মজনু মিয়া ছিলেন কৃষক। ১৯ জুলাই রাতে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফেরার পথে চাচা-ভাতিজা হত্যার শিকার হন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, বাড়িতে ফেরার সময় ব্যবসার নগদ অর্থ নিজের কাছে রাখতেন শাহজালাল। ওই টাকা ছিনিয়ে নিতে গ্রেপ্তার মোস্তফার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড হয়। তিনি আরও জানান, মোস্তফা পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি স্থানীয় একটি সমিতি থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়েছিল। সেই ঋণের কিস্তি পরিশোধ এবং পারিবারিক খরচ চালাতে তার বেশকিছু টাকার প্রয়োজন ছিল। এ কারণে তিনি শাহজালালকে খুন করে টাকা লুটের পরিকল্পনা করে। বিষয়টি জানিয়ে আলামিনকেও দলে ভেড়ায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার রাতে তারা জামালের চালার নির্জন জঙ্গলে অপেক্ষা করে। শাহজালাল ও মজনু ঘটনাস্থলে পৌঁছলে মোস্তফা মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। সে রড দিয়ে শাহজালালের মাথায় আঘাত করে। ভুক্তভোগী লুটিয়ে পড়লে তাঁর শরীরে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। এ সময় মজনু মিয়া ভয়ে চিৎকার করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান। তখন আলামিন তাঁকে রড দিয়ে পেটায়। তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে মোটরসাইকেলটি পাশের একটি জমিতে ফেলে দেয়। পরে আসামিরা টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকায় আত্মগোপন করে। মোস্তফা টাঙ্গাইল এবং আলামিন ঢাকার মোহাম্মদপুরে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে। মোস্তফার তথ্য অনুযায়ী স্থানীয় একটি ডোবা থেকে শাহজালালের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, আলামিন তিন মাস আগে মোস্তফার সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। এর আগে সে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে সে দেশে ফেরে। দু’জনের বিরুদ্ধে এলাকায় উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।