বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে যে চার দলকে দেখছেন ডি ভিলিয়ার্স

0
100
দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স, ছবি: এএফপি

১০ দল নিয়ে বিশ্বকাপ, এর মধ্যে পাঁচ দলই এশিয়ার। খেলাও হবে এশিয়ার মাটিতে। তবে বেশি দল কিংবা চেনা কন্ডিশনের পরও এবারের বিশ্বকাপে মাত্র একটি এশিয়ান দলকে সেমিফাইনালে দেখছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়কের অনুমান, রাউন্ড রবিন লিগ পেরিয়ে সেরা চারে জায়গা করে নেওয়া তিনটি দলই হবে এশিয়ার বাইরের।

১৩তম বিশ্বকাপ আসর নিয়ে সাবেক ক্রিকেটাররা এখন পর্যন্ত যেসব ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, তার মধ্যে ডি ভিলিয়ার্সের ভাবনা ব্যতিক্রম। এর আগে ভারতের বীরেন্দর শেবাগ, অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকগ্রা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল এশিয়ার দুটি দল সেমিফাইনালে উঠবে বলে মন্তব্য করেছিলেন।

শেবাগ, ম্যাকগ্রা ও গেইলের সঙ্গে ডি ভিলিয়ার্সের ভাবনার মিল দুটি দেশে। তাঁদের সবার মতেই স্বাগতিক ভারত এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে খেলবে। শেবাগ ও ম্যাকগ্রা অন্য শেষ চারে অন্য দুটি দল হিসেবে দেখছেন পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়াকে। আর গেইলের মতে ভারত ও ইংল্যান্ড ছাড়া সেমিফাইনাল খেলবে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।

ডি ভিলিয়ার্সের ধারণা, পাকিস্তান বা গতবারের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড কেউই সেমিফাইনালে যাবে না। ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’ নামে খ্যাত এই সাবেক ক্রিকেটার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেন নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক প্রশ্নোত্তর ভিডিওতে। স্বাগতিক ভারতকে বিশ্বকাপের ফেবারিট উল্লেখ করে ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘অবশ্যই ভারতকে রাখতে হবে। আমি তো মনে করি তারা আবারও বিশ্বকাপ জিতবে। এটা একটা রূপকথার বিশ্বকাপ হবে। সেমিফাইনালের ক্ষেত্রে ভারত, ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া—এই বিগ থ্রিকে রাখব আমি।’

সেমিফাইনালের আরেক দল হিসেবে ডি ভিলিয়ার্স বাজি ধরছেন নিজের দেশের ওপর, ‘যদিও পাকিস্তানের ভালো সম্ভাবনা আছে, তবু চার নম্বরে আমি দক্ষিণ আফ্রিকাকেই রাখব।’

ডি ভিলিয়ার্স সর্বশেষ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০১৫ সালে, সেবার সেমিফাইনাল খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন পর্যন্ত দেশটির বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সাফল্যও শেষ চারে ওঠা।

বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ভালো সম্ভাবনা দেখছেন ডি ভিলিয়ার্স
বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ভালো সম্ভাবনা দেখছেন ডি ভিলিয়ার্স, ছবি: এএফপি

এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা জায়গা নিশ্চিত করে অষ্টম দল হিসেবে, সুপার লিগ থেকে সবার শেষে। তবে টেম্বা বাভুমার দলকে হিসাবের খাতা থেকে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করেন ডি ভিলিয়ার্স, ‘ওদের জন্য কাজটা সহজ হবে না। তবে কখনোই ‘কখনো না’ বলতে নেই। এটা বিশ্বকাপ, দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর প্রত্যাশা কম। আর এটাই ওদের চাঙা করে তুলতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়েরা খুবই প্রতিভাবান, কিন্তু দল হিসেবে খুবই কম মূল্যায়িত।’

ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিফাইনালিস্ট বলার অর্থ এশিয়ার বাইরের দেশই তিনটি। এই ভবিষ্যদ্বাণী ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন ডি ভিলিয়ার্স নিজেই। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তিও আছে, ‘উপমহাদেশের বাইরের তিনটা সেমিফাইনালে রাখাটা ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও নিজের অনুমানে আমি অটল, কারণ বিশ্বকাপ ভালো উইকেটে খেলা হবে। আমার মনে হয় না বিশ্বকাপে খারাপ উইকেট থাকবে।’

এবারের আগে উপমহাদেশে বিশ্বকাপ হয়েছে তিনবার। এর মধ্যে যৌথভাবে ভারত-পাকিস্তানে আয়োজিত ১৯৮৭ আসরের সেমিফাইনালে খেলেছিল ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। ১৯৯৬ সালে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজনের আসরে শেষ চারে খেলেছিল ভারত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর সর্বশেষ ২০১১ সালে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশে হওয়া বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে এশিয়ার তিনটি দল—ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ছিল নিউজিল্যান্ড। অবশ্য এ তিনবারের মধ্যে দুবারই শিরোপা জিতেছে স্বাগতিক দেশ। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার পর ২০১১ সালে জিতেছিল ভারত।

ডি ভিলিয়ার্স অবশ্য চার সেমিফাইনালিস্টের নাম বলেই থেমে যাননি, ফাইনালের দুই দলের নামও অনুমান করেছেন। তাঁর মতে, ১৯ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও ইংল্যান্ড, ‘ফাইনালে খেলবে ভারত-ইংল্যান্ড। এ দুই দল যদি একে অপরকে ফাইনালে পায়, চমৎকার একটা ম্যাচ হবে; যদিও সেখানে আমি দক্ষিণ আফ্রিকাকেই দেখতে চাই।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.