স্ত্রী ও সন্তান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নজরুল ইসলামকে কারাগারের সেলের ভেতরে আলাদা একটি ব্লকে রাখা হয়েছিল। বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের আলাদা সেই ব্লকেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়ে দিতে চাওয়ায় এক কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং দুই কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মানসিক বিপর্যস্ত ছিলেন নজরুল। সেলের ভেতরে আলাদা ব্লকে রেখে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার সকালে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। এ সময় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালের নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনাকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কারারক্ষী রফিকুল ইসলাম। দায়িত্বে অবহেলার অপরাধে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই সহকারী কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে কারাগারের জেল সুপার লুৎফর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বালা হয়েছে বলেও জানান সুব্রত কুমার বালা।
জানা গেছে, কারগারের আলাদা ব্লকের দরজার সামনে থাকা নেট গলায় পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে বৃহস্পতিবার সকালে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নজরুল। এক পর্যায়ে কারা কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরে সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। নজরুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পাবদা গ্রামের সোহরাব উদ্দিনের ছেলে নজরুল ২০২১ সালের ২০ মার্চ থেকে এ কারাগারে বন্দি ছিলেন। কারাগারের একটি সূত্র বলছে, নজরুল স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন।
গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ি থানার এসআই লিটন শরীফ বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমীনের উপস্থিতিতে নজরুলের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।