ফুটবল যে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের আবেগের সঙ্গে মিশে আছে, তা আরেকবার দেখিয়ে দিয়েছে নাটোরের লালপুর। গতকাল শনিবার বিকেলে লালপুর উপজেলার শহীদ মমতাজ উদ্দিন স্টেডিয়ামে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হয়েছে, যেখানে হাজারো দর্শক ছিলেন। বিকেলে হওয়া ম্যাচটি দেখতে রোদ উপেক্ষা করে সকাল থেকেই দলে দলে স্টেডিয়ামে আসেন স্থানীয় মানুষ। খেলা শুরুর অনেক আগেই পূর্ণ হয়ে যায় ৩০ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি।
গতকালের এই প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি ও নাটোরের গোপালপুর একাদশের মধ্যে। ৯০ মিনিটের এই খেলা গোলশূন্য ড্র হয়েছে।
খেলাটির আয়োজন করেছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান লাভলী ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় লালপুরের খেলোয়াড়েরা দেশ-বিদেশের মাঠে গিয়ে খেলতেন। লালপুরে অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড় এসেছেন। বিকেল হলেই ফুটবল মাঠ দর্শকে পরিপূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে লালপুরে ফুটবল ঝিমিয়ে পড়ে। প্রয়াত যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান লালপুরের গোপালপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম নির্মাণ করেন। কিন্তু খেলাধুলা না হওয়ায় সেটি কাশবন ও গোচারণভূমিতে রূপ নেয়। তবে সংস্কারের পর এখন সেখানে খেলাধুলা হচ্ছে। লালপুরের ঝিমিয়ে পড়া ফুটবলকে চাঙা করতে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে সাড়া দিয়ে তারা গতকাল বিকেলে গোপালপুর একাদশের সঙ্গে খেলতে আসেন। খেলার খবরের প্রচারণা মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই হয়। আর তাতেই গতকাল বিকেলে ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি কানায় কানায় ভরে যায়।
খেলা দেখতে এসেছিলেন গোপালপুরের বাসিন্দা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ আসলাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি দুই দলের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। অভিভূত হয়েছি বিপুলসংখ্যক দর্শক দেখে। আমাদের সময়েও অনেক দর্শক হতো। কিন্তু নাটোরের কোনো মাঠে এত দর্শক এর আগে দেখেছি বলে মনে হয় না। ফুটবল যে কত জনপ্রিয় খেলা, আজ আবার তা স্মরণ করিয়ে দিল।’
দর্শক দেখে অভিভূত হন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক (সুমন)। খেলা শেষে তিনি দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, লালপুরের মানুষ যে ফুটবল ভালোবাসেন, তা দর্শক দেখে বোঝা গেল।
ট্রফি বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনিসুর রহমান, গোপালপুর পৌরসভার মেয়র রোকসানা মোর্ত্তজা, লাভলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিলভিয়া পারভিন প্রমুখ।