জটিলতায় সংস্কার হচ্ছে না সড়ক

0
104
উল্লাপাড়ার ভূতগাছা-পাঁচলিয়া আঞ্চলিক সড়ক

উল্লাপাড়ার ভূতগাছা-পাঁচলিয়া আঞ্চলিক সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, বড়হর গ্রামে করতোয়া নদীর পাড়ের প্রায় দেড় কিলোমিটারের বিভিন্ন স্থান ভেঙে যাওয়ায় সড়কটি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

এলজিইডি বলছে, ১২ কিলোমিটার সড়কটিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ৫০-৬০ মিটার জমি নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় সংস্কার করা যাচ্ছে না। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ১২ গ্রামের মানুষ।

বড়হর এলাকার অটোভ্যানচালক সাইদুর রহমান, শফিকুল ইসলাম ও আব্দুল হামিদের ভাষ্য, বড়হর গ্রামের নদীপাড়ে পাঁচ বছরে দুর্ঘটনায় তাঁদের একাধিক ভ্যান নষ্ট হয়েছে। এখনও ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে যাত্রীসহ ভাঙা স্থানগুলো পার হন।

স্থানীয়রা বলছেন, ১৬ বছর আগে এলজিইডি বগুড়া-নগবাড়ী মহাসড়ক থেকে ভূতগাছা গ্রামের পাশ দিয়ে পাঁচলিয়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে। এতে এলাকার মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতে সুবিধা হয়েছে। তবে গত পাঁচ-ছয় বছরে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কার্পেটিং উঠে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে ইট-খোয়া। বড়হর ও পেচরপাড়া গ্রামের করতোয়া নদীপাড়ের দেড় কিলোমিটার অংশ বেহাল অবস্থায় রয়েছে।

এসব স্থান দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে অটোভ্যান, ট্রাই সাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভটভটি, ট্রাকসহ নানা ধরনের যানবাহন। প্রায়ই রিকশা-ভ্যান উল্টে যাত্রীরা আহত হচ্ছেন। বড়হর গ্রামের নূর মহাম্মদ নামে এক ব্যক্তির জমির ওপর দিয়ে প্রায় ৬০ মিটার সড়ক যাওয়ায় সংস্কারে সংকট তৈরি হয়েছে। জমির মালিকের সঙ্গে সমঝোতা হচ্ছে না বড়হর ইউনিয়ন পরিষদ ও এলজিইডির।

ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হাসান নান্নু বলেন, মূল সড়ক কয়েক দফা করতোয়া নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। একটি অংশ এক ব্যক্তির জমির ওপর দিয়ে গেছে। এলজিইডির সহায়তায় কয়েকবার নূর মহাম্মদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও তিনি জমি দিতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে সংস্কার করা যায়নি। পাঁচ বছরে অন্তত ১০০ মানুষ এ সড়কে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বলে দাবি চেয়ারম্যানের।

এ বিষয়ে নূর মহাম্মদ বলেন, ১০ বছর আগে তাঁর চার বিঘা জমি ছিল। করতোয়ার ভাঙনে দেড় বিঘা বিলীন হয়েছে। তাঁর ৫-৭ শতাংশ জমি দখল করে সড়কটি চালু হয়। এখন তাঁর দুই বিঘারও কম জমি আছে। এটি তাঁর পরিবারের একমাত্র সম্বল। এ পর্যন্ত যতবার জমি দিয়েছেন, কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি। এখনও তাঁর জমির প্রায় ২০ শতাংশ সড়কে ব্যবহার হচ্ছে। তিনি আর জমি দিতে রাজি নন।

উল্লাপাড়া এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু সায়েদ বলেন, ভূতগাছা-পাঁচলিয়া সড়ক সংস্কারে অনেক আগেই প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু জায়গা নিয়ে গোলযোগ নিষ্পত্তি না হওয়ায় প্রকল্প অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নূর মহাম্মদ জমি না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। তারপরও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সুধীজনদের নিয়ে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.