গত মৌসুমের তুলনায় এবার কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের কোটবাড়ীতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে (বার্ড) কাঁঠালের ফলন ভালো হয়েছে। বার্ডের ১৫৬ একর জমিজুড়ে ধরে আছে হাজার হাজার কাঁঠাল। কোনো কোনো গাছে ৬০ থেকে ৭০টি কাঁঠালও ধরেছে। কাঁঠালের ঘ্রাণে বার্ড ক্যাম্পাস যেন ম–ম করছে।
গত রোববার দুপুরে বার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বার্ড পুকুরের সামনের একটি গাছে নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত ৭১টি কাঁঠাল ধরেছে। একই এলাকার আরেকটি গাছে ধরেছে অন্তত ৬০টির মতো কাঁঠাল। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে প্রায় আগা পর্যন্ত সব জায়গায় কাঁঠাল ঝুলছে। বার্ডের ৩ নম্বর টিলা, ক্রীড়া ও বিনোদন এলাকা, অফিস এলাকা, একাডেমিক ভবন, ময়নামতি মিলনায়তন এলাকা ঘুরে বেশির ভাগ গাছেই এমনটা দেখা গেল।
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন বলেন, দোঁআশ ও এঁটেল মাটির সংমিশ্রণে এখানে কাঁঠাল বেশি হয়ে থাকে। এঁটেল মাটিতে কাঁঠাল হলে রসাল হয় বেশি। লালমাই পাহাড়ের কাঁঠালের সুনাম আছে। এই জাতের কাঁঠাল সব এলাকায় মিলে না।
বার্ড সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বার্ডের ৭ হাজার ৯৩২টি কাঁঠাল ২১ দশমিক ৫০ টাকা দরে মোট ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে ৬ হাজার ৬৯৮টি কাঁঠাল ২২ টাকা দরে ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৫৩ টাকায় বিক্রি হয়। ২০২১ সালে ৭ হাজার ৩৩৬টি কাঁঠাল ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ওই বছর প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হয়েছিল ২৪ দশমিক ৫০ টাকা দরে। ২০২০ সালে বার্ড ক্যাম্পাসে কাঁঠালের ফলন ও দাম কমেছিল। ৬ হাজার ৫৫৩টি কাঁঠাল ১৪ টাকা দরে ১ লাখ ২ হাজার ২৯৩ টাকা বিক্রি করা হয়েছিল।
বার্ডের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলের কাঁঠালের জন্য বার্ড ক্যাম্পাস প্রসিদ্ধ। লালমাই পাহাড়ের মাটি লাল। ওই লাল মাটিতে প্রচুর কাঁঠাল ধরে। এ জন্য এখানকার কাঁঠালের ঐতিহ্য আছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসিল আরেফিন ভূঁইয়া বলেন, বার্ডের একেকটা গাছে অনেক কাঁঠাল ধরে। এই কাঁঠালের পুষ্টিগুণ অনেক। ক্যালরি, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি–এর চাহিদা পূরণ করে। সব শ্রেণির মানুষ কাঁঠাল খেতে পারেন। কাঁঠালকে গরিবের ফলও বলা হয়।