কলমের খোঁচায় এক বন্দীর দুই চোখ নষ্ট করে দিলেন আরেক বন্দী

0
147
কলমের খোঁচায় চোখ হারানো বন্দী নূর হোসেনকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে। আজ সকাল নয়টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে

নোয়াখালী জেলা কারাগারে কলম দিয়ে আঘাত করে এক বন্দীর দুই চোখ নষ্ট করে দিয়েছেন মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আরেক কয়েদি। আজ রোববার সকাল সোয়া ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আঘাতপ্রাপ্ত ওই আসামির নাম নূর হোসেন ওরফে বাদল (৩০)। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, মাদক মামলায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে গত ৬ জুলাই কারাগারে আসেন বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে মো. মহিউদ্দিন (৩৩)। তবে দুই বছর আগে থেকে বেগমগঞ্জের নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিওচিত্র ধারণ ও মারধরের আলোচিত মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন হাজতি আসামি নূর হোসেন। নূর হোসেনের বাড়ি একই ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম শাহাব উদ্দিন।

আজ সকাল আনুমানিক সোয়া ছয়টার দিকে কয়েদি মহিউদ্দিন আকস্মিকভাবে একটি কলম দিয়ে হাজতি আসামি নূর হোসেনের দুই চোখে আঘাত করেন। এতে নূর হোসেনের দুটি চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাৎক্ষণিক নূর হোসেনের চিৎকারে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কারাগারের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কারারক্ষীরা। তাঁরা গুরুতর আহত নূর হোসেনকে উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষের সহায়তায় দ্রুত নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চক্ষু রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানোর পর তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির আঘাতে হাজতি আসামির চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা কারাগারের জেলার আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, মহিউদ্দিনের অভিযোগ, হাজতি আসামি নূর হোসেনের মামা তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাদক মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ কারণে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে নূর হোসেনের চোখে আঘাত করেছেন। তিনি তাঁর অপরাধ স্বীকার করেছেন। আঘাতে গুরুতর আহত নূর হোসেনকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জেলার আমিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় জেলা কারাগারের পক্ষ থেকে তিনি বাদী হয়ে সুধারাম থানায় আসামি মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। এ ছাড়া ঘটনাটির তদন্ত করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কারারক্ষীদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারা কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি থানার পুলিশও ঘটনাটি তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, চোখে গুরুতর জখম অবস্থায় নূর হোসেন নামের এক হাজতি আসামিকে সকালে হাসপাতালে আনা হয়। এখানকার চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখানোর পর তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী ওই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.