কক্সবাজারে আত্মস্বীকৃত ১০১ ইয়াবা কারবারির দেড় বছর করে কারাদণ্ড

0
145
আত্মসমর্পণ করা ১০১ ইয়াবা কারবারিকে মাদক মামলায় দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত

কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ করা ১০১ ইয়াবা কারবারিকে মাদক মামলায় দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া দায়ের করা অস্ত্র মামলা থেকে তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরের দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে ১৭ জন উপস্থিত ছিলেন। বাকি ৮৪ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ফরিদুল আলম। তিনি জানান, ১০১ জনের প্রত্যেককে ১ বছর ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রত্যেককে ২০ হাজার করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া ওই সময় দায়ের করা অস্ত্র মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেয়া হয়।

আদালতের বরাতে পিপি বলেন, আদালত অবজারভেশনে বলেছেন যাতে আগামী দিনে কেউ এ পেশায় না ফিরে সে জন্য এ রায় ভুমিকা রাখবে। এ রায় ইয়াবা চোরাকারবারিদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক হয়ে থাকবে।

এর আগে বেলা ১১ টার দিকে আদালতে আনা হয় কারাগারে থাকা ১৭ আসামিকে। বাকিরা পলাতক ছিলেন। বেলা সাড়ে ১২ টায় মিনিটে রায় পড়া শুরু করেন।

নথি পর্যালোচনায় আদালত বলেন, ২০১৯ সালেই ৩৭ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে তুলে ধরেন। ১৬/২/২০১৯ তারিখ ৩৫ লাখ পিস ইয়াবা ও ৩০টি অস্ত্র উদ্ধার হয়। আত্মসমর্পণকারী আসামিরা উদ্ধার করা আলামত তাদের বলে স্বীকার করেন। অস্ত্র মামলায় ৩৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় আছেন- সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির চার ভাই (আব্দুল আমিন, আব্দুর শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সাল রহমান); ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু; চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম। আরও আছেন- টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ ও তার বড় ভাই আব্দুর রহমান; বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদের ছেলে দিদার মিয়া; টেকনাফ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ; টেকনাফ সদর ইউনিয়নের এনামুল হক এনাম মেম্বারসহ অনেকে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে ১০২ জন ইয়াবাকারবারী আত্মসমর্পণ করে। মামলা চলাকালে সোহেল নামে এক আসামি কারাগারে মারা গেছেন। আত্মসমর্পণের পর তাদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩০ টি দেশীয় তৈরি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে তৎকালীন ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা বাদী হয়ে পৃথক ২ টি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং আসামিদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা করা হয়। আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষা ফলাফল যাচাই, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়াসহ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.