করোনার ভুয়া সনদ দিয়ে ৩ কোটি, জালিয়াতিতে আরও ৮ কোটি টাকা বাগিয়েছিলেন তিনি

0
144
রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম, ফাইল ছবি

বর্তমানে কারাবন্দী মোহাম্মদ সাহেদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত করেছেন সিআইডির পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদের বিরুদ্ধে করা মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাহেদ ও তাঁর সহযোগীদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’

২০২০ সালের ১৬ সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর এলাকায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের সময় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ (হাতকড়া লাগানো)

২০২০ সালের ১৬ সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর এলাকায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের সময় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ (হাতকড়া লাগানো)

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ঢাকার উত্তরা ও মিরপুরে বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতাল গড়ে তুলেছিলেন। সরকারের অনেক মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতেন। টেলিভিশন টক শোতেও দুর্নীতি দমনসহ নানা বিষয়ে কথা বলতেন তিনি।

২০২০ সালে দেশে যখন করোনা মহামারি ভয়াবহ রূপ নেয়, সে সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি করে তাঁর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার অনুমোদন নেন সাহেদ। তবে সেখান থেকে ভুয়া সনদ দেওয়ার তথ্য প্রকাশের পর ওই বছরের ৬ জুলাই তাঁর হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। চরম কঠিন সময়ে মানুষের জীবন–মৃত্যু নিয়ে তাঁর প্রতারণার বিষয়টি সামনে এলে গা ঢাকা দেন সাহেদ। এর সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় সাতক্ষীরার দেবহাটা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর সাহেদের প্রতারণার অন্য বিষয়গুলোও সামনে আসতে থাকে।

দুই বছর তদন্তের পর সিআইডি বলছে, করোনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণা ছাড়াও সাহেদ ও তাঁর সহযোগীরা মিলে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে ৭ কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে কাজের কথা বলে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ইট, পাথর, বালুসহ নির্মাণসামগ্রী নিয়েছিলেন। টাকা না দিয়ে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ব্যাংকের চেক দিয়েছেন। কিন্তু ওই সব চেক দিয়ে ব্যবসায়ীরা টাকা তুলতে পারেননি।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, সাহেদ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবি ব্যবহার করে নিজেকেও প্রভাবশালী হিসেবে তুলে ধরতেন। এর মধ্য দিয়ে অন্যদের কাছে নিজেকে আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণ করতেন। এটাই ছিল তাঁর প্রতারণার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতি ধরা পড়ার পর সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালের অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল বিভাগ করোনা পরীক্ষা নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছিল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.