কমে আবার বাড়ছে ডিমের দাম, পেঁয়াজের বাজারও বাড়তি

0
96
ডিমের দাম

আমদানির হুমকি, ভোক্তা অধিদপ্তর ও র‍্যাবের অভিযানে কিছুটা কমেছিল ফার্মের ডিমের দাম। তবে দু’দিনের বেশি তা স্থায়ী হয়নি। আমিষজাতীয় খাদ্যপণ্যটির দাম আবার বাড়ছে। অন্যদিকে ভারতের রপ্তানি শুল্ক আরোপের খবরে দেশে পেঁয়াজের বাজারও চড়া হতে শুরু করেছে।

সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কয়েকটি এলাকা ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বাদামি রংয়ের ডিম ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় ডজন বিক্রি হচ্ছে। সাদা রংয়ের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। তবে অন্যান্য ছোট বাজার ও মহল্লার তুলনায় কারওয়ান বাজারে ৫ টাকা কমে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে। দু’দিন আগে গত শনিবারে বাজারে ফার্মের প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সাদা ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়।

উৎপাদন কম ও মুরগির খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে দুই সপ্তাহ ধরে ডিমের বাজার ছিল টালমাটাল। ১৪০ টাকা থেকে দফায় দফায় বেড়ে এক পর্যায়ে রেকর্ড ১৭০ টাকায় বিক্রি হয় প্রতি ডজন ফার্মের ডিম। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানির হুমকি, বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) অভিযানে খুচরা ও পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কমতে শুরু করে। এ সময় কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু দাম কমলেও তা স্থায়ী হয়েছে মাত্র দু’দিন। আবার বাড়তে শুরু করেছে পণ্যটির দাম।

পেঁয়াজের বাজার চড়া: ভারত রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের খবরে দেশের বাজারে এক দিনে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। কোথাও কোথাও সরবরাহ কমেছে পণ্যটির। সোমবার রাজধানীতে ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকার আশপাশে। এ ছাড়া দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি খুচরায় বিক্রি হয়েছে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকায়। অথচ দু’দিন আগে দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়েছিল।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম ৩৬ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

রাজধানী ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুল মাজেদ বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করেছে। ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা রপ্তানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ দাম বেশি নেবেন। আমদানিকারকদের এ বাড়তি অর্থ দিয়েই আমদানি করতে হবে। পাইকারি পর্যায়ে ১০ টাকার মতো বেড়েছে দাম। তবে ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের বাজারে বড় প্রভাব পড়তে পারে।

এদিকে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ভারত রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক বসালে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে। তবে দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) দেওয়া হবে। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ভারতের পদক্ষেপের কারণে যদি পেঁয়াজের দাম বাড়ে, তাহলে তারা কীভাবে সামলাবেন। এখানে তো তাদের কোনো হাত নেই। তবে গ্রীষ্মকালের পেঁয়াজ আসবে অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের প্রথম দিকে। কিন্তু অতীতেও দেখেছেনু সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে। তিনি বলেন, ভারতের বিকল্প হিসেবে মিসর, তুরস্ক, চীন থেকে আমদানির ব্যবস্থা করতে হবে। পেঁয়াজের বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করবে। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়বে, কিন্তু ওই রকম আকাশচুম্বী হবে না বলে তাদের ধারণা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.