বরিশালে শ্রমিক লীগের নতুন কমিটি ঘিরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

0
100
বরিশালে শ্রমিকদের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিলে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায়

বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের সদ্যঘোষিত কমিটিকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। এই কমিটি বাতিলের দাবিতে আজ শুক্রবার সকালে নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি করেছেন সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়া আফতাব হোসেন ও তাঁর সমর্থকেরা। সেখানে শ্রমিকদের আরেকটি পক্ষের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আফতাব হোসেনের সমর্থকেরা সড়ক অবরোধের পর সেখানে ছয় দফা দাবিতে জেলা সড়ক পরিবহন বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে অবরোধ শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দুই পক্ষে এই সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় মনোযোগ সাদিক আবদুল্লাহর

শ্রমিক লীগের একটি অংশের নেতারা জানান, গত মঙ্গলবার বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সেখানে সভাপতি করা হয়েছে আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাসকে। সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন বিলুপ্ত হওয়া নগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহম্মেদ ওরফে মান্না। দুজনই নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী। ছিটকে পড়েছেন আগের কমিটির সভাপতি আফতাব হোসেন। তিনি নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহর অনুসারী।

পাল্টাপাল্টি অবরোধের কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়
পাল্টাপাল্টি অবরোধের কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়

নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে আজ সকাল ১০টার দিকে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন আফতাব হোসেন ও তাঁর সমর্থক শ্রমিকেরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় আধা ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন তাঁরা। এর মধ্যেই বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিদায়ী মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী জেলা সড়ক পরিবহন বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা কামাল হোসেন ওরফে লিটন মোল্লার অনুসারীরা সেখানে অবরোধ শুরু করেন। তাঁরা শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন নির্বাচনসহ ছয় দফা দাবি জানান। একপর্যায়ে শ্রমিক লীগ নেতা আফতাবের সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বাধে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে থেমে সংঘর্ষ হয়। এতে পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুই পাশে আটকা পড়ে অসংখ্য যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন।

আফতাব হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাউকে না জানিয়ে মহানগর শ্রমিক লীগের কমিটি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে এই কমিটি করায় সাধারণ শ্রমিক লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি করলে অতর্কিতে আমাদের শ্রমিকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’ মহানগর শ্রমিক লীগের কমিটির নামে বাস টার্মিনালে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেন তিনি।

তবে কামাল হোসেন মোল্লা বলেন, তিনি শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন দাবি করেছেন। এমন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আফতাবের নির্দেশে হামলা হয়েছে।

ঘটনার পরপরই সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। দুপুরে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলী আশরাফ ভূঞা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, পুরো পরিস্থিতি এখন শান্ত এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। আশা করছেন, আর কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না। যদি এমনটা করার কেউ চেষ্টা করে, তবে তা দমন করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.