অগ্নিকাণ্ড-ভাঙচুরের দায় স্বীকার করেছেন বিএনপি নেতারা: ডিবি প্রধান

0
95
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের হামলা-সংঘর্ষ ।

রাজধানীর পল্টনে বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশ থেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, বিআরটিসি বাসে আগুনসহ ২৮ অক্টোবর থেকে চলমান অবরোধে চালানো নাশকতার দায় স্বীকার করেছেন পুলিশের কাছে রিমান্ডে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এমনকি এ ধরনের নাশকতা করা ঠিক হয়নি বলে তারা মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।

বুধবার দুপুর রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিবি প্রধান।

তিনি বলেন, ‘প্রথমত যে সব কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের কাছে আছেন, তারা প্রথমে বলছিল যে, নাশকতা আমাদের দলের লোকজন করেনি। মনে হয় অন্য কেউ করেছে। এটা নিয়ে তারা সন্দিহান ছিল। তখন আমাদের কাছে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ, স্মার্ট টিমের করা ভিডিও তাদেরকে দেখানো হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনারা স্টেজে ছিলেন, সমাবেশের নেতৃত্বে ছিলেন। এ ছাড়া ভিডিওতে তারা দেখেছেন, সমাবেশের দিন মঞ্চে থাকা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কে কি রোল প্লে করেছেন। সুলতান সালাউদ্দিন কোথায় লাঠি নিয়ে দৌড়াচ্ছেন, রবিউল ইসলাম নয়ন কোথায় আগুন লাগাচ্ছেন, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ মিন্টুর বাসা থেকে যে গানপাউডার আমরা পেয়েছি, মিন্টু এর যে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে। সব কিছু দেখার পরে তারাও (কেন্দ্রীয় নেতা) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন এটা ঠিক হয়নি।’

মূল পরিকল্পনাকারী কারা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘তারা হয়তো মনে করছেন বাংলাদেশের কয়েকটা বিচ্ছিন্ন স্থানে আগুন লাগালেই সবাই ভয় পেয়ে যাবে। অথবা পুলিশ ডিমোরালাইজ হবে, এটা ঠিক না। পুলিশ বাহিনীর কাজ হচ্ছে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। সাধারণ মানুষের চলাচলে যেন কোনো বাধা সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। আমাদের পুলিশের প্রত্যেক সদস্য, ডিবি পুলিশ, থানা পুলিশ, রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছেন। ছদ্মবেশে ঘোরাফেরা করছেন। বাসে যাত্রীর ছদ্মবেশে পুলিশ ঘুরছে। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে চায়, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এমনকি এইসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে ধরিয়ে দিলে পুরস্কার দেওয়া হবে। যা কয়েকদিন আগে আমাদের ডিএমপি কমিশনার ঘোষণা করেছেন। নাশকতাকারীকে ধরিয়ে দিলেই ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় দেখবেন, একটা লোকের একটি মাত্র বাস আছে। এটা দিয়ে তার সংসার চলে। এই বাসটিতে যখন আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তখন তার জীবন শেষ হয়ে যায়। পরিবার নিয়ে রাস্তায় নেমে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। অতএব আমি মনে করি, সবাই মিলে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা করতে কাজ করতে হবে। সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে। কেউ যেন কোনোভাবে হামলা করতে না পারে। সেদিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি। এ সকল বিচ্ছিন্ন ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে তাদের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করতে পারব।’

এদিকে সমাবেশের দিন, হরতাল ও অবরোধে গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ ও মতিঝিল বিভাগ। এ বিষয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের ভূমিকা পালনকারী বেশ কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। অংশগ্রহণকারী অনেকের নাম পেয়েছি। তাদের মধ্যে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সাইদ হাসান মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাসা থেকে ৮ কেজি গান পাউডার উদ্ধার করি। মিন্টু স্বীকার করেছে, বাশার এবং মাসুদকে দিয়ে এগুলো সে বানায়। রবিউল ইসলাম নয়ন ও সুলতান সালাউদ্দিন যে সহায়তা করেছে তিনি সেটিও স্বীকার করেছেন।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.