সিলেটের কানাইঘাটে এক নারীকে (১৮) কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ গতকাল সোমবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গত রোববার রাত ১১টার দিকে কানাইঘাটের পুরানফৌদ গ্রামে ধর্ষণের ওই ঘটনা ঘটে। এরপর ভুক্তভোগী নারী ওই রাতেই কানাইঘাট থানায় অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—কানাইঘাট উপজেলার নন্দিরাই গ্রামের দুদু মিয়া (৩৬), বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের হেলাল আহমদ (৩৮), বড়দেশ সরদারীপাড়া গ্রামের ফরহাদ আহমদ (৩৫), বীরদল আগফৌদ গ্রামের আবদুল করিম (২৪) ও বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের জুবের আহমদ (২৪)।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার শিকার ওই নারীর বাবার বাড়ি কানাইঘাটে। শ্বশুরবাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলায়। প্রায় ২০ দিন আগে কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসামি দুদু মিয়ার সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। সেই সূত্রে দুদু মিয়ার সঙ্গে তাঁর মুঠোফোনে কথা হতো। সম্প্রতি ওই নারীর ৯ মাসের শিশু অসুস্থ হয়। তখন দুদু মিয়া তাঁকে জকিগঞ্জ উপজেলার ফুটিজুরি গ্রামের এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর দুদু মিয়া রোববার বেলা তিনটার দিকে বিয়ানীবাজারে গিয়ে কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ওই নারীকে নিয়ে আসেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুদু মিয়া কবিরাজের কাছে না নিয়ে কৌশলে কানাইঘাট উপজেলার বীরদল বাজার এলাকায় ওই নারীকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুদু মিয়া মুঠোফোনে তাঁর অন্য সহযোগীদের ডাকেন। এরপর ওই নারীকে কৌশলে খালোমুরা বাজারে নিয়ে যান। পরে দুদু মিয়াসহ আসামিরা পুরানফৌদ গ্রামের এক পুকুর ঘাটে নিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ওই নারীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। তাঁরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, ওই ঘটনায় গতকাল দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে হেলাল আহমদ ও আবদুল করিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাদক, মারামারিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আজ আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হবে।
ওসি মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগী নারীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর সন্তানও বর্তমানে সুস্থ।