দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কথামালার রাজনীতি নয়, তাঁর দল যে কথা বলে সে কথা বাস্তবায়ন করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করে।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ ইশতেহার ঘোষণার অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ইশতেহার ঘোষণা করছেন। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্য শুরু করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সরকারের অর্জনগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাঙালিদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি।
মাথাপিছু আয়, জিডিপি ও বাজেটের আকার, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানা খাতে সরকারের অর্জনগুলো তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ইশতেহার কমিটির প্রধান ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক সূচনা বক্তব্য দেন। এরপর বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
স্মার্ট বাংলাদেশ থিমে ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগানে ইশতেহার দেয় দলটি।
আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারের স্লোগান—‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’। এ ইশতেহারে ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনবদলের সনদ’ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেই ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ছিল দলটির।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির ইশতেহারের শিরোনাম ছিল—‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’। আর সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইশতেহারের শিরোনাম ছিল—‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’।
আজ বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা রূপকল্প-২০২১-এর ঘোষণা দিয়েছিলাম। দিনবদলের সনদ হিসেবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করি। এরপর শত বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে ২০১৪ ও ২০১৮ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে আমরা সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা থাকা সত্ত্বেও সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে সব সময়ই যে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি, এমন দাবি করব না। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যা বলি, তা বাস্তবায়ন করি।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘নির্বাচন এলেই মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ এবং উন্নয়নবিরোধী একটি চক্র ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে সক্রিয় হয়ে ওঠে। নির্বাচনে কূটকৌশল অবলম্বন বা কারচুপির মাধ্যমে কিংবা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে তারা আটঘাট বেঁধে মাঠে নামে। সফল না হলে জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিশোধ স্পৃহায়। অগ্নি-সন্ত্রাস, যানবাহন পোড়ানো, বোমাবাজি, নাশকতা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ভীতি-সন্ত্রস্ত করে ঘরবন্দী করতে চায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তার ওপর এবার তারা বিদেশ থেকেও কলকাঠি নাড়ছে।’